রাজারহাটে এক বেসরকারি সংস্থার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ২৪ মে, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুড়িগ্রামের রাজারহাটে এক বেসরকারি সংস্থা ও তার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সাম্প্রতিক সেই সংস্থার একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবারও আলোচনায় ওঠে বেসরকারি সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দূর্ণীতির বিষয়গুলো। সমালোচনা ঢাকতে নিয়োগটিতে আবেদনের সময়সীমা পার হবার পর ভুয়া উল্লেখ করে থানায় জিডি করে সংস্থাটির চেয়ারম্যান।

অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নামে নামকরণ হওয়ার সংস্থাটির অবস্থান কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার হরিশ্বর তালুক গ্রামে। রেজি নং- ৬৮৮ এবং এনজিও বূরো রেজি নং ২৭৪৭ হিসেবে পরিচয় দেয় সংস্থাটি। প্রধান কার্যালয় হিসেবে উল্লেখ থাকা স্থানে সরজমিনে গিয়ে একটি প্রতিবন্ধীদের জন্য স্কুলে লাগানো সাইনবোর্ড ছাড়া কোন অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থাপিত হওয়ার তারিখ উল্লেখ না থাকা সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্বে আছেন একই গ্রামের আব্দুল খালেক নামে এক ব্যক্তি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য পদে চাকুরী করতেন আব্দুল খালেক। চাকুরীতে থাকার সুবাধে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ইরানে কিছুদিন কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই থেকে নামের সঙ্গে যোগ করেন ইরানী পদবী। চাকুরী থেকে অবসরে গিয়ে নামের পুর্বে যোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা পদবী। তবে বৈধ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সাম্প্রতিক(গত ৪ মে) অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সারাদেশে ১৪ টি পদে প্রায় ২৫ হাজার জনবল নিয়োগের ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে নিয়োগের সত্যতা যাচাই করার জন্য সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আমার সংস্থার অন্যান্য কর্মকর্তারা এটা করতে পারে। তিনি আরও জানান, বিদেশের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের জন্য জনবল দরকার। সেজন্য নিয়োগের আলোচনা চলছে। কিন্তু অর্থায়ন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়তা দিলে আমরা সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবো। সেটা এখনো আলোচনার পর্যায়ে আছে।
এছাড়াও নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়া আব্দুল খালেককে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, আমি তো ভাতা পাবার জন্য যুদ্ধ করিনি। এব্যাপারে রাজারহাট উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার রজব আলী বলেন, ইরানী খালেক কিসের মুক্তিযোদ্ধা? তার মুক্তিযোদ্ধারর কোন কাগজে নেই। আব্দুল খালেক কে প্রতারক আখ্যা দিয়ে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এছাড়াও, ২০১৩ সালে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ও অটিস্টিক বিদ্যালয় ও হরিশ্বর তালুক অটিজম প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সংস্থাটি। ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়ার কথা বলে একাধিক লোকের কাছে  টাকা নেয়ার অভিযোগও আছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে।
এমন একজন ভুক্তভোগী হারুন মিয়া। তিনি জানান, ওই ইরানীকে চাকুরীর জন্য আমি এবং আমার ভগ্নিপতি ৩ লাখ টাকা দিই। এখন টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি বিভিন্ন টালবাহনা করে আসছে। তার মতো অনেকেই এই প্রতারণায় পড়েছেন বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, সংস্থাটির সাথে আমাদের কোন রকম যোগাযোগ নাই। এ সংস্থার কমিটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয় অবগত নন বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *