নোবিপ্রবি এ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ক’ সেমিনার অনুষ্ঠিত

নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ক’ দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলে (আইকিউএসি) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। সেমিনারে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির  উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম। আইকিউএসি ওই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর এবং রেজিস্ট্রার মোঃ জসীম উদ্দিন। নোবিপ্রবি আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন ইউজিসির আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, আইআইটি পরিচালক ও এপিএ টিম লিডার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম হোসেন, আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ।
সেমিনার সঞ্চালনায় ছিলেন আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক জনাব মোঃ মুহাইমিনুল ইসলাম সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যেকে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বর্তমানে ৫০ লাখ তরুণ রয়েছে, আগামী বছরগুলোতে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটিতে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে আমরা যদি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দক্ষ করে, যুগের চাহিদামতো উপযোগী করে নিতে পারি-তবেই বাংলাদেশ স্মার্ট হবে। এছাড়া দক্ষ জনবল তৈরি করে আমরা বিদেশে পাঠাতে পারি।’

এসময় তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি এবং রিসার্চ সেলকে প্রযুক্তি ও গবেষণায় আরো বেগবান করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘নোবিপ্রবিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ডি-নথির বাস্তবায়ন নোবিপ্রবির উন্নয়নকে আরো ত্বরান্বিত করবে। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করাই হলো সত্যিকারের স্মার্টনেস। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের সকলকে নিজ নিজ জায়গায় নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করতে হবে। কারণ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে ২০৪১ সালের আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট রূপকল্প আমরা গড়ে তুলবো। আর এজন্য নোবিপ্রবিকে অনন্য ভূমিকা রাখতে হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদার-উল-আলম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদার জন্য ভাষা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের হাতিয়ার হলো মাতৃভাষার জয়। আজকে ফেব্রুয়ারি মাসে আমি মহান ভাষা শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।’

এসময় তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যেকে নিজেদের স্মার্টনেস বজায় রাখতে হবে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে। সময়কে গুরুত্ব দিয়ে নিজেকে সর্বদা সৎ কর্মে নিয়োজিত রাখতে হবে। সময়মতো কাজ না করলে, দুর্নীতিতে জড়িয়ে গেলে দেশ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পুনরায় পেছনের দিকে হাঁটবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রসর করতে শিক্ষা ও গবেষণায় মনোযোগী হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মিশন ২০২১, ২০৪১, টেকসই উন্নয়ন ২০৩০ এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় কৌশলগত দক্ষতা অর্জনের আলোকে মানসম্মত তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করে দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করাই হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভিশন।

এসময় তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে কেবল ইট পাথরের উন্নয়ন নয়, আমাদের মানসিকতায় উন্নয়ন আনতে হবে। দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে। সকলকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, ‘সরকারের স্মার্টনেসের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্মার্টনেসকে আরো অধিকতর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সময়মতো কাজ করা, অফিসের দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমেই ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন সেটা আমাদের কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

বিশেষ অতিথি নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক  ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী সর্বপ্রথম যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা দিয়েছিলেন তখন অনেকের কাছে এর ধারণা অস্পষ্ট ছিলো। মহান আল্লাহর কৃপায় তিনি এর বাস্তবায়ন করেছেন। বর্তমানে আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে অনেকটা পথ এসেছি। তারই দৃষ্টান্ত হিসেবে শিক্ষা-গবেষণায় নোবিপ্রবি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রগামী। আমরা ক্রমান্বয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে নিজেদের একীভূত করছি। নোবিপ্রবি ই-নথি থেকে ডি-নথিতে পদার্পন করেছে।

এসময় তিনি আরো বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশী ডিজিটালাইজড হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এভাবে গড়ে তুলতে পারলেই  প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

বিশেষ অতিথি নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নোবিপ্রবি বর্তমানে এপিএ র‌্যাকিংয়ে মর্যাদাকর অবস্থানে এসেছে। ভবিষ্যতেও এই অবস্থান ধরে রাখতে হবে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ক দিনব্যাপী এই সেমিনারের সাফল্য কামনা করছি। অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *