‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’

                                                                                                                                                               প্রেস বিজ্ঞপ্তি

এগিয়ে যাওয়ার ২৮ বছর……

ঢাকা (বিনোদন), ০২ নভেম্বর, ২০২৩ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’ ঘোষণা করা হলো পুরস্কারের জন্য নির্বাচিতদের নাম সামগ্রিক অবদানের জন্য ইমদাদুল হক মিলন, নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে মাহবুব ময়ূখ রিশাদ

বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিহাস খুব বেশি পুরোনো নয়। ১২৮০ বঙ্গাব্দের (১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দ) জ্যৈষ্ঠ সংখ্যায় ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় বঙ্কিম সহোদর পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মধুমতী’ গল্প দিয়েই বাংলা গল্পের যাত্রা শুরু। অন্যদিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস প্যারীচাঁদ মিত্রের ‘আলালের ঘরের দুলাল’ (১৮৫৭)। তবে উপন্যাসে নবযুগের সূত্রপাত ঘটে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫) প্রকাশের মধ্য দিয়ে।…বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের প্রসঙ্গে বলা যায়, প াশের দশকে কথাসাহিত্য হয়ে ওঠে মৃত্তিকাস্পর্শী ও জাতিসত্তার শিকড়সন্ধানী। ষাট দশকে এদেশের কথাসাহিত্যে সূচিত হয় নতুন স্রোত। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক কল্লোল আর সংঘাতের পটে রচিত হয় গল্প-উপন্যাস। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কথাসাহিত্যে লক্ষ করা যায় নতুন নতুন নিরীক্ষা আর বাঁক।

২০১৫ সালে প্রবর্তিত হয় ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার’। উদ্দেশ্যÑ দেশের প্রবীণ এবং নবীনÑএই দুই শ্রেণির কথাসাহিত্যিকদেরই অনুপ্রাণিত করা। এই বছর এ পুরস্কার পেয়েছেন দুজন লেখকÑসাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য খ্যাতিমান কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন এবং নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে (অনূর্ধ্ব চল্লিশ বছর বয়স্ক লেখক) মাহবুব ময়ূখ রিশাদ । তাঁরা পুরস্কার হিসেবে পাবেন যথাক্রমে পাঁচ লাখ এবং এক লাখ টাকা। এছাড়া প্রদান করা হবে ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সার্টিফিকেট। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে এই দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছিলেন যথাক্রমে শওকত আলী এবং সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম। ২০১৬ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন হাসান আজিজুল হক এবং স্বকৃত নোমান। ২০১৭ সালে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছিল জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত এবং মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে। ২০১৮ সালে পুরস্কৃত হয়েছিলেন রিজিয়া রহমান এবং ফাতিমা রুমি। ২০১৯ সালে পুরস্কার পেয়েছেন রাবেয়া খাতুন ও সাদাত হোসাইন। ২০২০ সালে পুরস্কৃত হয়েছেন হাসনাত আবদুল হাই ও নাহিদা নাহিদ। ২০২১ সালে পুরস্কার পেয়েছেন সেলিনা হোসেন ও ফাতেমা আবেদীন। ২০২২ সালে পুরস্কৃত হয়েছেন আনোয়ারা সৈয়দ হক ও মৌরি মরিয়ম।

ইমদাদুল হক মিলন
সাহিত্যের জমিন আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি। তাঁর এই গুণের জন্য বাংলা কথাসাহিত্যের আকাশে আমরা দেখতে পাই জ্বলজ্বলে একটি নামÑইমদাদুল হক মিলন। তাঁর কথাসাহিত্য দুটি ধারায় প্রবাহিত। একদিকে জনমনোরঞ্জনের জন্য তিনি লিখেছেন, অন্যদিকে নান্দনিক দ্যুতি ছড়িয়েছেন কথাসাহিত্যে।
তাঁর জন্ম ১৯৫৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর, বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে, নানাবাড়িতে। বাবা গিয়াসুদ্দিন খান। মা আনোয়ারা বেগম।

ইমদাদুল হক মিলনের লেখা প্রথম গল্প ‘বন্ধু’। এটি ‘পূর্বদেশ’ পত্রিকার ছোটদের পাতা ‘চাঁদের হাট’-এ ১৯৭৩ সালে ছাপা হয়েছিল। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থগল্প সংকলন ‘ভালোবাসার গল্প’। প্রথম উপন্যাস ‘যাবজ্জীবন’।

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে উপন্যাস : অধিবাস, পরাধীনতা, কালাকাল, বাঁকাজল, পরবাস, কালোঘোড়া, বনমানুষ, ভূমিপুত্র, নদী উপাখ্যান, পর। তবে তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম হচ্ছে ‘নূরজাহান’। আত্মজৈবনিক উপন্যাস ‘এমন জনম’-ও সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।

গল্পকার হিসেবে ইমদাদুল হক মিলন সাধারণ পাঠকদের কাছে এখনো অনাবিষ্কৃত। উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ : নিরন্নের কাল, জোছনারাতে তিনটি মেয়ে, গল্পসমগ্র-১, গল্পসমগ্র-২।

‘ভূতের নাম রমাকান্ত কামার’, ‘সাত কিশোরের অভিযান’সহ তিনি ছোটদের জন্যও কয়েকটি চমৎকার বই লিখেছেন। একজন নাট্যকার হিসেবেও ইমদাদুল হক মিলন সুপরিচিত। এছাড়া টকশো’র উপস্থাপক হিসেবেও ছোটপর্দায় ইমদাদুল হক মিলন একজন সুপরিচিত মুখ।

বাংলা সাহিত্যে তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ইমদাদুল হক মিলন পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন একুশে পদক (২০১৯) এবং ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার আইআইপিএম সুরমা চৌধুরী ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। এবার কথাসাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য অর্জন করলেন ‘এক্সিম ব্যাংক অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ
এই সময়ের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখক মাহবুব ময়ূখ রিশাদ। তাঁর লেখায় ফুটে ওঠে নাগরিক জীবন, সেই জীবনের একাকিত্ব। তবে সেই গল্পের প্রেক্ষাপটে মাঝে মাঝে ব্যবহার করেন জাদুবাস্তবতার উপাদান।

তাঁর জন্ম ৩০ জুন ১৯৮৮ সালে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে, নানাবাড়ির কাছে। বাবা প্রথিতযশা মনোচিকিৎসক ও কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল। মা মাহফুজা আখতার।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদের কৈশোর কেটেছে ময়মনসিংহের অলিগলিতে। সেই সময়টার প্রতি তাঁর রয়েছে প্রবল ভালোবাসা। তিনি অর্জন করেছেন ইন্টার্নাল মেডিসিনের সর্বোচ্চ ডিগ্রি এফসিপিএস। লেখক হিসেবে মাহবুব ময়ূখ রিশাদের যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ সালে, একটি ছোটগল্পের মাধ্যমে। গল্পটির নাম ছিল ‘পাপমুক্তি’।

প্রথম বই টিন এজ প্রেমের উপন্যাস ‘আকাশ ভরা নীল কষ্ট’ প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে গল্পগ্রন্থ : সন্ধ্যাকালীন ট্রেনে গোপন যাতায়াত (২০১৪); নির্জনতার জ্যামিতিক বিষণ্ণতায় (২০১৫); দিকশূন্যপুর (২০১৬); ক্রুশপথে নিখোঁজ গল্প (২০১৭); তর্কশয্যায় মৃত্যু (২০১৯)। আলোচিত উপন্যাস ‘আরিমাতানো’ (২০২০)। ‘রাইরিন্তার শেষ উপহার’ গল্পগ্রন্থের জন্য নবীন সাহিত্যশ্রেণিতে ‘এক্সিম ব্যাংক অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩’ অর্জন করলেন মাহবুব ময়ূখ রিশাদ।

বার্তা প্রেরক
মোমিন রহমান
মুঠোফোন : ০১৭১৩১৯১৪৩৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *