রাজারহাটে তিস্তার ভাঙ্গনরোধে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : তিস্তার ভাঙ্গনে রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন ঢাকায় বসবাসরত কুড়িগ্রামের বাসিন্দারা।

তিস্তার ভাঙনে রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন ঢাকায় বসবাসরত কুড়িগ্রামের বাসিন্দারা।
উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামে ভাঙছে তিস্তা নদী। তিস্তার অব্যাহত ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছেন অন্তত দুই হাজার পরিবার। শুধু রাজারহাট উপজেলাতে গত তিন মাসে প্রায় এক হাজার বাড়িভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কিন্তু নদী ভাঙন রোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কোথাও কোথাও ভাঙনরোধে দায়সারা কাজ করছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এমন অভিযোগ তুলে তিস্তার ভাঙনে রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন করেছে ঢাকার কুড়িগ্রামের বাসিন্দারা। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকাস্থ কুড়িগ্রামবাসী ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন কুড়িগ্রামের বাসিন্দা ও রাজনীতিক আমসা আ-আমিন। তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম বাসী সব সময় অবহেলিত। তার ওপর এ জেলায় যেসব নদী রয়েছে প্রতিবছর নদীগুলোর ভাঙনের শিকার হয়ে হাজার হাজার লোক ঘরবাড়ি হারা হয়ে পড়ে। তিনি তিস্তাসহ কুড়িগ্রামে অন্য নদীগুলোর ভাঙনরোধে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
ঢাকাস্থ কুড়িগ্রাম সমিতির মহাসচিব সাইদুল আবেদীন বলেন, কুড়িগ্রাম জেলায় দারিদ্র্যের হার ৭১ শতাংশ। এই দারিদ্র্যের পেছনে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বন্যা ও নদীভাঙন। সরকার প্রতিবছর বন্যার মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মাধ্যমে বালুর বস্তা ফেলার মতো কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। এতে কখনোই ভাঙন বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাই সরকারকে তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নাব্যতা কমে যাওয়ায় তিস্তার দুইবার উজাড় করে তিস্তা নদীর ক্রমাগত প্রস্থে বাড়ছে। একসময় দুই কিলোমিটারের তিস্তা এখন ১০ থেকে ১২ কিলোমিটারে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামে গত তিন মাসে তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের ভাঙনে কয়েক হাজার পরিবার ভিটাছাড়া হয়েছেন। এসব পরিবারের অধিকাংশই রাস্তা ও অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন।
মানববন্ধন থেকে ছয় দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো:-
১। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।
২। চলমান নদী ভাঙন কবলিত স্থানে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
৩। রাস্তায় ও অন্যের জমিতে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোর জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
 ৪। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বিশেষ আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।
৫। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়া আঠারোটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি অধিগ্রহণ করে দ্রুত ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬। স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিস্তার ভাঙন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমানে তিস্তায় ভাঙন নেই। পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙন হয়ে থাকলে আগে হতে পারে। তখন তিনি দায়িত্বে ছিলেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *