নোয়াখালীর হাতিয়ায় সুমি হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ০৯ জুলাই, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় সুমি হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। শুক্রবার ৮ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হরনী ইউনিয়নের আলী বাজারে প্রায় ঘন্টব্যাপী এ কর্মসূচী পালন করেন তারা। কর্মসূচীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফ’সহ জনপ্রতিনিধি, সচেতন মহলের লোকজন ও স্থানীয়রা বক্তব্য রাখেন।

জানা গেছে, গত দুই বছর আগে পারিবরিক ভাবে হাতিয়ার হরনী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পূর্ব মোহাম্মদপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে সুমনা আক্তার সুমির সাথে একই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ইয়াছিন মাহমুদ বেলালের সাথে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে মেহেরিনা আক্তার নামের এক বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। বর্তমানে ৭মাসের অন্তঃস্বত্তা ছিলেন সুমি।

মানববন্ধনে নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকে ব্যবসার নামে সুমির পরিবারের কাছ থেকে তার স্বামী বেলাল তিন ধাপে ৫০হাজার, ৪০হাজার এবং ২৫হাজার টাকা নেয়। গত এক বছর আগে সুমির কাছে আরও ২লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে বেলাল। তার দাবীকৃত টাকা না পেয়ে সুমিকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে বেলাল ও তার পরিবারের সদস্যরা। কয়েকমাস আগে সুমিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় বেলাল ও তার বাবা-মা।

এবিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরে মাধ্যমে একাধিক শালিস বৈঠকে বিষয়টি সমাধান করা হলেও পুনঃরায় সুমিকে মারধর করে বেলাল। গত ৪মাস আগে বাবার বাড়িতে চলে আসে সুমি, এর দেড় মাস পর সুমির শশুর, শ্বাশুড়ী, বাসুর ও ননদরা এসে তাদের দায়িত্বে সুমিকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু তাতেও বন্ধ হয়নি সুমির ওপর নির্যাতন। এর সূত্রধরে গত ৩ জুলাই রোববার সকালে নিজেকে পিটিয়ে মেরে ফেলতেছে বলে মা রোকেয়া বেগমকে মোবাইলে জানায় সুমি। কথা বলার মধ্যে হঠাৎ তার মোবাইল সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সুমি কথা বলার মধ্যে কল কেটে যাওয়ায় তাদের বাড়িতে দ্রুত ছুঁটে যায় তার মা রোকেয়া বেগম। কিন্তু বেলাল ও তার পরিবারের লোকজন সুমির সাথে তাকে দেখা করতে না দেওয়ায় সে ফিরে আসে। বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে সুমির মৃত্যুর বিষয়টি জেনে তারা বাড়িতে গিয়ে বেলালদের ঘরের মেঝেতে সুমির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তার গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ ছিলো। সুমিকে পিটিয়ে হত্যা করে সে আত্মহত্যা করেছে বলে বেলাল প্রচার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সুমি হত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। হত্যাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারসহ সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

মৃতদেহ উদ্ধারকারি চেয়ারম্যানঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নূর নবী জানান, নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামি সপ্তাহে ময়না তদন্ত রিপোর্ট ফেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *