আওয়ামী লীগ কর্মীকে গলা কেটে হত্যা

কুমিল্লা প্রতিনিধি, আবদুল মান্নান, ২০ মে ২০২৩ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের আলেখারচরে আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হককে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল শুক্রবার বাড়ির পাশের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে ফেরার পথে এই হত্যাকান্ডের শিকার হন এনামুল। অভিযোগ রয়েছে, এনামুলের সাথে একটি পক্ষের মাদ্রাসা কমিটি নিয়ে এবং মাদক সেবনের ভিডিও প্রকাশ করে দেয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে বিরোধ ছিলো। তারই রেশ ধরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর এনামুলকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তার গলা ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। নিহত এনামুল হক আলেখাচর গ্রামের আবদুল ওয়াদুদের পুত্র ও সদর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

এনামুলের পিতা আবদুল ওয়াদুুদ জানান, শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজ থেকে এনামূল বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন মিলে এনামুলকে টেনেহিঁচড়ে এনে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মসজিদের সামনে ছুরিকাঘাত করে। এসময় মসজিদের ভেতর আমি এবং এনামুলের বড় ছেলেও নামাজের জন্য উপস্থিত ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাইরে বের হয়ে দেখি আমার ছেলে রক্তাক্ত, তাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য কয়েকজন চেষ্টা করছে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ নিয়ে যায়। বিকাল ৩ টার দিকে হাসপাতালে এনামুল মারা যায়।

স্থানীয় কাজী জহিরুল ইসলামকে এই খুনের জন্য অভিযুক্ত করে এনামুলের বাবা বলেন, বিরোধ থাকলে তা বিচার হতো, মীমাংসা হতো- এভাবে আমার ছেলেকে প্রকাশ্যে মারা হলো, তা মেনে নেয়া যায় না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নিয়াজ পাবেল জানান, আওয়ামী লীগ কর্মী এনামুলের সাথে জামাত নেতা কাজী জহির নামে এক ব্যাক্তি ও তার অনুসারীদের রাজনৈতিক বিরোধের পাশাপাশি এনামুলের প্রতিষ্ঠিত আলেখারচর দক্ষিণ পাড়া জমিরিয়া তালিমুল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার কমিটি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

এছাড়া বৃহস্পতিবার কাজী জহিরের মাদক সেবন ও জুয়া খেলার একটা ভিডিও ভাইরাল হয়। এর জন্য এনামুল কে দায়ী করে। এতে কাজী জহির গং এনামুলের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার জুম্মা পরে বের হলে কাজী জহিরের উপস্থিতিতে তার ভাই আমানুল সহ কয়েকজন এনামুল এর গলা কেটে হত্যাচেষ্টা করে। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে হাসপাতালে সে মারা যায়। এনামুলের হত্যাকারীরা জামাত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ তার।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে কুমিল্লা সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন বলেন, মাদক সেবনের ভিডিও ভাইরাল সহ বিভিন্ন ইস্যুতে এনামুলের সাথে বেশ কয়েকজনের বিরোধ ছিল। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে খতিয়ে তদন্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *