বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়ক এখন পুকুর, ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা

বগুড়া প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ০২ মে, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেছে মহাসড়ক। অসংখ্য স্থানে ছোটবড় গর্তে প্রতিনিয়ত ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহন, চালক ও যাত্রীরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও দুর্ভোগের শেষ নেই। দীর্ঘ তিন বছরেও বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের গোদারপাড়া রাস্তাটির দিকে নজর দেয়নি কেউ। এটি রাস্তা নয়, যেন পুকুর। সড়কটি পানিতে ডুকে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

এই মহাসড়কের দুর্ভোগের আলোচিত নাম গোদারপাড়া বাজার। বগুড়ার পৌরসভার অন্তর্গত হলেও মানুষের দুর্ভোগ দেখেও নজর দেয়নি জনপ্রতিনিধিরাও। ফলে দুর্ভোগের পাশাপাশি দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি এই সড়কে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বগুড়া সদরের শিকারপুর গ্রামের এক মটর সাইকেল আরোহী। বৃষ্টির পানিতে খানাখন্ড ডুবে যাওয়ায় ভুতের কান্ড ঘটছে এই সড়কে। গর্তের মধ্যে পড়ে উল্টে পড়ছে ছোটবড় যানবাহন। রাস্তার কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় উল্টে যাচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক। এতে শুধু আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমই ব্যাহত হচ্ছে না, পথচারীরাও পড়েছেন দুর্ভোগে।

বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে বগুড়া-নওগাঁ সড়কের খানাখন্ডে পরিণত রাস্তাটি। দুর্ঘটনার ভয়ে অনেক যানবহন ধীরে ধীরে পারাপার করছে। যেকারণে পুকুরে পরিণত রাস্তার দু-পারে যানবাহনের যানজট চোখে পড়ারমত। স্থানীয়দের প্রশ্ন, রাস্তাটি কার ? দেখার কেউ কি আছেন ?

গোদারপাড়া বাজারের দুলাল হোসেন ও আবু সাঈদ নামের দুজন ব্যবসায়ী বলেন, মহাসড়কটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস-ট্রাক, হলার, মাইক্রো, সিএনজিসহ হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। প্রায় তিন বছর ধরে রাস্তাটি বেহাল হয়েপড়ে আছে। মাঝেমধ্যে সওজ বিভাগের লোকজন নরম ইট দিয়ে কোনো রকমে রাস্তাটি মেরামত করে চলে যায়। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আগের অবস্থার চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী এম আই মিরাজ জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারো রাস্তাটি বালু আর ইট দিয়ে মেরামত করছে। নতুন করে সংস্কার করা জরুরী হলেও, লোক দেখানো কার্যক্রমে স্থানীয়দের মধ্যে নানা ধরণের প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। সিএনজি চালক মাহাবুর ও মোস্তফা বলেন, সড়কটিতে লোক দেখানো মেরামত করে। ফলে দুদিন যেতে না যেতেই আবারোও একই অবস্থা। দুর্ঘটনার ঝুঁকি মাথায় নিয়ে পুকুরে পরিণত রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে যানবাহনের একজন চালক জানান, প্রতিদিন গাড়ি চালাতে গিয়ে ঝাকুনিতে কোমর ব্যাথা ধরে যায়। একটি প্রভাবশালী মহল মটর শ্রমিক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে রাস্তায় চাঁদাবাজি করে। সরকার যদি রাস্তাটির উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ না দেয় ! তাহলে, প্রতিদিন অনেকগুলো মটর শ্রমিক নেতাদের চাঁদা দিতে হয়। জরুরীভিত্তিতে রাস্তা সংস্কার করার দাবি সাধারণ মানুষের।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে গোদারপাড়ার স্থানীয় পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেন নি। বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন তুলছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *