গুরুদাসপুরে মাদ্রাসা থেকে শিকল পায়ে পালালো ১০ বছরের কণ্যা, আটক ১

নাটোর প্রতিনিধি, আসাদুজ্জামান, ২১ এপ্রিল, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : শুক্রবার (তারিখ ২১ এপ্রিল) দিবাগত রাত তিনটার দিকে নাটোরের গুরুদাসপুর চাচকৈড় বাজার পাড়ায় একটি দোকানের সেডের নীচে শিশু কণ্যার কান্নার শব্দ। আশে-পাশের বাসিন্দারা খোঁজ নিতেই দেখে পায়ে লম্বা লোহার শিকল পড়া আনুমানিক ১০ বছর বয়সী এক সুশ্রী শিশু কণ্যা। তার কেন এ অবস্থা জানতে চাইলে আরো জোরে কান্না। শুধু বলছিলো, ‘পালাইয়া আইছি, আর যামু না। আমারে বাঁচান। আমারে আবার পাঠাইলে মইর‌্যা যামু’।

মোছা. জিম আক্তার (১০) নামে এই শিশুটি পালিয়ে এসেছে একটি মাদ্রাসা থেকে। বার বার মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার কারণে হুজুর তার পায়ে লোহার শিকল লাগিয়ে তালা দিয়ে আটকে রাখতো। কিন্তু রাতে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে আসে শিশুটি। রাতেই খবর পেয়ে থানা পুলিশ জিম আক্তারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং বিস্তারিত শোনার পর অভিযুক্ত মাদরাসার হুজুর মো. ইয়ারুল ইসলামকে আটক করে। শিশু কন্যা জিম আক্তার উপজেলার কাছিকাটা দক্ষিন পাড়া গ্রামের মৃত. আয়নুল হকের মেয়ে।

জানা যায়, জিম আক্তারের মা তাকে পার্শ্ববর্তী চলনালী গ্রামে একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনার জন্য ভর্তি করলে সে মাঝে-মধ্যে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে পালিয়ে যেতো। পালাতে যেন না পাড়ে সেজন্য মাদরাসা হুজুর ইয়ারুল ইসলাম শিশুটিকে লোহার শিকল পড়িয়ে রাখতো। শিকল পড়ানোর যন্ত্রনায় সইতে না পেরে গত রাত তিনটার দিকে সে পালিয়ে পৌর সদরের চাচকৈড় বাজার পাড়ার রাস্তার পাশে দোকান ঘরের সেডের নীচে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করতে দেখে এলাকাবাসি এগিয়ে এসে একটি বাড়িতে আশ্রয় দেয়।

মেয়েটির মা মিনিয়ারা বেগম জানান, তার মেয়ে পড়াশুনা অমনোযোগী। পড়তেই চায় না। তার জন্য মাদ্রাসার হুজুরকে বলেছিলাম শাসন করার জন্য। কিন্তু হুজুর যে এমন করবে বুঝতে পারি নাই।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং দুপুরে তার মায়ের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। মাদ্রাসার হুজুর ইয়ারুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *