কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৫ জনকে ৭০ বছরের কারাদন্ড

নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ০৩ অক্টোবর, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দুর্নীতি দমন কমিশনের  (দুদক) মামলায় এক কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে সোনালী ব্যাংকের ৪ সিনিয়র কর্মকর্তাসহ ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫জনকে বিভিন্ন ধারায় তিন কোটি ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, নোয়াখালীর সদর উপজেলার সোনাপুর বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স ডলফিন সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক  ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এ জিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুন, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার জাকের উল্যাহ, ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ এমএ রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের বরখাস্তকৃত ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদ।
সোমবার ৩ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে নোয়াখালী জেলা স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এ.এন এম মোরশেদ খান এই রায় দেন। এ সময় তিন আসামি ছাড়া বাকী দুই আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম জানান, দুপুর ১২টার দিকে মামলার শুনানি শেষে বিচারক রায় দেওয়ার সময় মামলার তিন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার ১ নম্বর ও ২ নম্বর আসামি পলাতক ছিলেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ব্যবসায়ী ফারুক ও চার ব্যাংক কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্লেজ গুদামে মাছ না রেখে ভুয়া প্লেজ লেটার প্রস্তুত করে। পরে তা ব্যাংকে দাখিল করে বিল-ভাউচার প্রস্তুত করে ঋণের অর্থ গ্রাহকের নামীয় ঋণ হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন করে ঋণের অর্থ অন্যত্র  স্থানান্তর ও রুপান্তর করে মানিলন্ডারিং এর সাথে সম্পৃক্ত ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি অর্জন করে।  সর্বশেষ আলামত ধ্বংস (প্লেজকৃত মাছ) করে ১ কোটি ৯৭ লক্ষ ১৬ হাজার ৭শত টাকা আত্মসাৎ করে। পরে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নোয়াখালীর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান, বর্তমানে উপপরিচালক, গোয়েন্দা ইউনিট, প্রধান কার্যালয়,কর্তৃক তদন্ত শেষে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে  বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
দুদকের পিপি আরও জানান, দুটি ধারায় মেসার্স  ডলফিন সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক  ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক ও সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এ জিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুনকে দুর্নীতির দায়ে ২০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ব্যবসায়ী ফারুককে ২ কোটি দুই লক্ষ টাকা ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক এ জিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুনকে এক কোটি ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অপর তিন ব্যাংক কর্মকর্তা সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার জাকের উল্যাহ, ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ এমএ রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের বরখাস্তকৃত ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদকে একাধিক ধারায় ১০ বছর করে কারাদন্ড  দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে ২২ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের ২৫ বছর করে রায়ে দন্ডিত করা হলেও এক সাথে সাজা কার্যকর হওয়ায় তাদের তিন আসামিকে ১০ বছর সাজা খাটতে হবে বলেও জানান এ আইনজীবী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *