মফ আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : আজ ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিসেনারা জেলা শহর মাইজদী পিটিআই’তে রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটির পতন ঘটিয়ে মুক্ত করে নোয়াখালী। এতে বৃহত্তর নোয়াখালীর মাটিতে প্রথম উড়িয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
নোয়াখালীকে হানাদার মুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতি যখন প্রায় চুড়ান্ত, ঠিক তখনই ৭ ডিসেম্বর ভোরে মাইজদী পিটিআই ও বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাইস্কুল ক্যাম্প ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানী মিলিটারিরা ও মিলিশিয়ারা। এ সময় বেগমগঞ্জ-লাকসাম সড়কের বগাদিয়া ব্রিজ অতিক্রম করতেই সুবেদার লুৎফুর রহমান ও শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন মুক্তি বাহিনীর হামলায় অসংখ্য মিলিটারি সদস্য ও মিলিশিয়া নিহত হয়।
পর দিন ৭ ডিসেম্বর ভোর বেলায় জেলা শহরের মাইজদি কোর্ট ষ্টেশন, জিলা স্কুল, দত্তেরহাট, নাহার মঞ্জিল মুক্ত করে অকুতভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তারপর পাক আর্মি ও রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটি মাইজদি পিটিআই সকাল ৯টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে পিটিআই ক্যাম্পের ভেতরে অবস্থানরত রাজাকাররা এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করতে থাকে।
এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পার্শ্ববর্তী সরকারি আবাসিক এলাকার এক ব্যক্তি মারা যান। পাল্টা গুলি চালায় মুক্তিযোদ্ধারাও। গুলির শব্দে কেঁপে উঠে পুরো শহর। দিন ভর চলে উত্তেজনা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে অন্ধকার নেমে আসার সাথে সাথে অবস্থা বেগতিক দেখে ক্যাম্প ছেড়ে পালাতে থাকে রাজাকাররা।
বিপরীত দিক থেকে গুলি বন্ধ হলে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পের ভেতরে গিয়ে দেখতে পান সেখানে ১০-১২ জন রাজাকারের লাশ পড়ে আছে। আরো কয়েকজন রাজাকার ধরা পড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে। এভাবে ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় নোয়াখালী জেলা ।
জেলার মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মোজ্জাম্মেল হক জানান, করোনা কারনে এবার প্রোগ্রাম সংক্ষিপ্ত হবে। দুুপুরে মুক্তস্কয়ারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, পরে জেলা প্রশাসক হল রুমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন রয়েছে।