বগুড়ায় সেনা কর্মকর্তা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, গোলাগুলিতে দুই সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ
বগুড়া জেলা প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ২ ডিসেম্বর ২০১৭ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট শফিকুল ইসলাম (৪৫) হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে পুলিশ-সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে দুই সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ ও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সেনা কর্মকর্তা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার শাকাপালা এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র, ১টি বিদেশী পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শাজাহানপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, বুধবার ভোরে শাকাপালা এলাকায় সেনা সদস্য হত্যাকান্ডের পরপরই শাকপালা এলাকার রাকিব, আব্দুল হালিম বগা, রবিউল নামের ৩ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আরেক সন্ত্রাসী ফুল মিয়া ওরফে বিষু ওরফে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ফুল মিয়া ওরফে বিষু ওরফে সম্রাট হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে প্রেরণের পর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেফতারকৃতরা সবাই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং কিভাবে হত্যাকান্ড ঘটায় তার বিবরন দেয়। পরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে শাজাহানপুর থানার পুলিশ ফোর্সসহ গ্রেফতারকৃত রাকিব ও আব্দুল হালিম বগাকে নিয়ে শাকপালা এলাকা যায়। সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান নেয়া সহযোগী সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পুলিশ পাল্টা ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পুলিশের হেফাজতে থাকা রাকিব ও বগা পালানোর চেষ্টা করলে গোলাগুলির মধ্যে পড়ে গিয়ে তারা গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় থানার এএসআই আবু তাহের, কনষ্টেবল রেজাউল ও আব্দুর রশিদ গুরুতর আহত হয়। পরে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু, ৭.৬৫ বোরের ১টি বিদেশী পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। গুলিবিদ্ধ দুই সন্ত্রাসী শজিমেক হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধিন রয়েছে। এছাড়া আহত ৩ পুলিশ সদস্য পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গোলাগুলির ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
উল্লেখ্য, বুধবার ভোরে শাকাপালা পার্কের সামনে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্টে অবসরকালীন ছুটিতে (এলপিআর) থাকা সার্জেন্ট শফিকুল ইসলাম (৪৫)। নিহত শফিকুল ইসলাম নরসিংদি জেলার মনোহরদী উপজেলার হালুকদীয়া গ্রামের মৃত আব্দুর গফুরের ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট আরশি হোল্ডিং বিল্ডিং এর ২য় তলায় সরকারী কোয়ার্টারে থাকতেন। যশোর ক্যান্টমেন্টে মৌলিক প্রশিক্ষণে (রিক্রুট ট্রেনিং) থাকা নিহতের ছেলে আশরাফুল ইসলামকে (১৮) শাকপালা বাসস্ট্যান্ড থেকে নিয়ে কোয়ার্টারে ফেরার পথে ছিনতাইকারী হাতে খুন হন তিনি।