কোটচাঁদপুরের মেধাবী ছাত্র টুলু হত্যা মামলায় র‌্যাবের সফল অভিযানে চার আসামী গ্রেফতার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, জাহিদুর রহমান তারিক, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের মেধাবী ছাত্র হাবিবুর রহমান টুলু হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় চার আসামীকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলো তালসার গ্রামের মুল্লুক চাঁদ মন্ডলের ছেলে জাকির মন্ডল, একই গ্রামের জহির মন্ডলের ছেলে মিল্টন মন্ডল, নজরুল মন্ডলের ছেলে আসাদুল ও ইসমাইল মন্ডলের ছেলে জাকির। শনিবার বিকালে ঘাগা তালসার বাজারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব।

পিবিআই এর তদন্তে আদালতে হত্যা মামলা ও আসামীদের নামে ওয়ারেন্ট থাকার পরও আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতো বলে অভিযোগ। ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় গতকাল র‌্যাবের স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি গোলাম মোর্শেদের নেতৃত্বে অভিযান দল গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে তাদের ঘাগা বাজার থেকে হত্যা মামলার এই চার আসামীকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃতরা ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার কোর্ট পিটিশন নং-২৩/১৭, কোর্ট সিআর-২৪/১৮ ধারা ৩০২/৩৪ দন্ড বিধিতে দায়ের করা মামলার আসামী বলে র‌্যাব জানায়। অভিযোগ পাওয়া গেছে তালসার গ্রামের মেধাবী ছাত্র হাবিবুর রহমান টুলকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়। এরপর হত্যাকান্ড ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে।

পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) আদালতের নির্দেশে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি উঠে আসায় প্রমানিত হয় ডাক্তারের ময়না তদন্ত রিপোর্ট ও থানায় দায়ের করা আত্মহত্যা মামলাটি সঠিক ছিল না।

মামলা সুত্রে জানা গেছে ২০১৭ সালের ১০ জুন তালসার গ্রামের সাব্দার আলীর স্কুল পড়ুয়া ছেলে হাবিবুর রহমান টুলুকে একই গ্রামের জাকির হোসেন, আসাদুল, নজরুল ইসলাম, আলামিন, মিল্টন, জমির, আমিরুদ্দীন ও জমির পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে।

হাবিবুর রহমান টুলু হত্যা মামলার আইনজীবী গৌতম কুমার জানান, আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার পর থেকে নানা ভাবে বাদীকে হয়রানী করে আসছে। মোটা অংকের টাকার প্রস্তাব দিয়ে মামলাটি মিমাংশা করতে না পেরে প্রধান আসামী জাকির হোসেন বাদী সাব্দার আলীর নামে ৫/৬টি মিথ্যা মামলা করে।

ফলে আসামীদের অত্যাচারে উল্টো বাদীই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো। হাবিবুর রহমান টুলু (১৪) কোটচাঁদপুরের তালসার কাজী লুৎফর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র। একই স্কুলের ছাত্রী ও নজরুল মন্ডলের মেয়ে শাহানাজ ঘটনার তিন দিন আগে অন্য একটি ছেলের সাথে পালিয়ে যায়।

এ নিয়ে তারা স্কুল ছাত্র টুলুকে সন্দেহ করতে থাকে। গত ১০ জুন রাতে প্রধান আসামী জাকির মন্ডল ফোন করে টুলুকে তার সাথে দেখা করতে বলে। টুলু সরল মনে তার সাথে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন গ্রামের একটি বাগানে ঝুলন্ত অবস্থায় টুলুর লাশ পাওয়া যায়। মৃতদেহ খুজে পাওয়ার আগেই আসামীরা বাড়ির মালামাল নিয়ে গাঢাকা দেয়।

বাদী টুলুর পিতা সাবদার মন্ডল জানান, টুলু বাইরে যাওয়ার সময় তার কাছে নিজের শিক্ষা বৃত্তির ১৩’শ ও জমি বিক্রির এক লাখের বেশি টাকা ছিল। সে টাকাও খুনিরা নিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *