এ পরিবারে জম্ম হওয়াটা আমার ভুল ছিল : পার্থী শাহাদাত 

নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ২৫ মে, ২০২৪ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন   বলেন, এ পরিবারে জন্ম হওয়াটাই আমার ভুল ছিল। আমি যদি এটা জানতাম, তাহলে মাকে বলতাম- আমাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলো।’
শুক্রবার ২৪ মে রাতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন । তিনি তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন  টেলিফোন মার্কা নিয়ে ।ওবায়দুল কাদেরের আরেক ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র। তিনি এ নির্বাচনে গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলকে আনারস প্রতীকে প্রার্থী দিয়ে আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে নেমেছেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার প্রার্থিতা বাতিল করতে গোলাম শরীফকে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে আপিল করিয়েছেন আমার ভাই আবদুল কাদের মির্জা। আদালত তাদের নাকচ করে দিয়ে আমার প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এরপর তারা এখন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে পুলিশ। আমি হাইকোর্ট থেকে আটজনের জামিন এনেছি। এখন অজ্ঞাত আসামি বলে আমার লোকদের হয়রানি করা হচ্ছে। প্রতি রাতে পিপুলের হেলমেট বাহিনী আমার নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। আমার টেলিফোন প্রতীকের কোন কর্মী বা এজেন্ট বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না। মেয়রের নির্দেশে এসবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাউন্সিলর রাসেল।
শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার একটা লোক রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারে না। তাদের ধরে নিয়ে বলে তোমার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এখানে আওয়ামী লীগের লোকদেরও বিএনপি-জামায়াত বলে এখন নির্যাতন করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় চালান দেওয়া হচ্ছে। আমি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।তিনি আরও বলেন, আমার বড়ভাই মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ঘোষণা দিয়ে বলেন- তাদের প্রার্থী পিপুল আওয়ামী লীগের। কিন্তু বাংলাদেশের কোথাও আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি। আমি সারাজীবন তাদের সহযোগিতা করে আসলেও তারা আমাকে কখনো সহযোগিতা করেনি। তাদের ভয়ে আমার বাড়িতে একটা কাজের লোক পর্যন্ত নাই। তারা হত্যার হুমকি দিয়ে সবাইকে বের করে দিয়েছে।
বড়ভাই ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জাকে ইঙ্গিত করে শাহাদাত আরও বলেন, ‘তারা দুজনই দাবি করে, তারা দুজন ভাই। আমি নাকি তাদের ভাই না। আমি কি শিয়াল-কুকুর। মেয়র বলে আমি নাকি কুলাঙ্গার। এ বিচার আমি কার কাছে দেব? প্রশাসন তো আমার বিরুদ্ধে। আমি শুধু বলবো- বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আমার প্রথম বিজয় হয়েছে। বাকি বিজয় ২৯ মে হবে। এখন আমার বিজয় ছিনিয়ে নিতে তারা উঠেপড়ে লেগেছে।’
এর আগে ১৫ মে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরীর এক মতবিনিময় সভায় ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনকে কুলাঙ্গার আখ্যা দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, শাহাদাত আমার ভাই নয়। সে কুলাঙ্গার। তাকে কেউ ভোট দিবেন না।প্রসঙ্গে শাহাদাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা বসুরহাটে ঘুরে দেখুন, তাদের কোনো ভোট আছে কি না? তারা হেলমেট বাহিনীর লোকদের দিয়ে বয়স্ক লোকদের হুমকি দিচ্ছে; কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি অসহায় মানুষ, আমার ওপরে আল্লাহ আছে, আর নিচে জনগণ আছে। ২৯ তারিখে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, ইনশাআল্লাহ আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।’তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে বারবার আমাকে নির্বাচন থেকে বহিষ্কার করছে, মনোনয়নপত্র বাতিল করছে। তাদের তাণ্ডবে আমার একটা কর্মী কোম্পানীগঞ্জে ঘুমাতে পারছে না। তারা হেলমেট বাহিনীর পাশাপাশি হাতুড়ি বাহিনীও তৈরি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *