মাদারীপুরে ৪ পৌর ২১টি ওয়ার্ড ও ২২ ইউপি রেডজোন ঘোষণা; মানছেনা স্বাস্থ্য বিধি
মাদারীপুর প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ১৮ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : মাদারীপুরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বাড়তে থাকায় জেলার ৪ পৌরসভার ২১ ওয়ার্ড ও ২২ ইউনিয়ন রেডজোন ঘোষণা দিয়ে বুধবার দুপুরে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। একই সঙ্গে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানাসহ কঠোর হুশিয়ারি দেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ওসব রেডজোনে লকডাউন শুরু হয়েছে।
কিন্তু সরকারি আদেশ অমান্য করে অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে চলাচল করছে। সকালে বাজার করতে আসা ৫০ ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো তোয়াক্কা করেনি ক্রেতা-বিক্রেতারা। জানা গেছে, সদর উপজেলার পুরান বাজার, নতুন শহর, ইটেরপুল বাজারে এবং রাজৈর উপজেলার রাজৈর বাজার ও টেকেরহাটে রেডজোনে লকডাউন মানার কোনো বালাই নেই।
কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের প্রয়োজনীয় দোকানের পাশাপাশি খোলা রয়েছে অন্যান্য জিনিসপত্রসহ গার্মেন্টসের দোকান-পাট। নির্ধারিত সময়ের পরেও অনেক দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। রেডজোনের কোনো প্রভাব নেই কোথাও। দোকান-পাট খোলা দেখে মনে হয় কেউ কিছুই জানে না।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে ছোট-বড় যানবাহনের পাশাপাশি ইজিবাইক, সিএনজি চালিত গাড়ি, মাহিন্দ্র, ব্যাটারী চালিত রিকসা-ভ্যান মটরসাইকেল। সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। মাদারীপুরের সাথে ঢাকাসহ দুরপাল্লার পরিবহন ও আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকে।
অথচ জেলায় এক সপ্তাহের মধ্যে করোনা রোগীর সংখ্যা হুঁ-হুঁ করে বেড়ে গেছে। প্রাণঘাতি করোনা রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রাজৈর উপজেলায়। সংক্রমন রোধে প্রশাসন থেকে রেডজোন ঘোষণা করে দিয়েছে লকডাউন। কিন্তু তা বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেই।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও গণবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার ১ থেকে ৭নং ওয়ার্ড এবং সদর উপজেলার ৫ ইউনিয়ন। শিবচরে পৌরসভার ১,৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডসহ ৮ ইউনিয়ন। কালকিনি উপজেলার পৌরসভার ১,৪,৫,৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডসহ ৪ ইউনিয়ন। রাজৈর উপজেলার পৌরসভার ১,২,৩,৫,৬ ও ৮ নং ওয়ার্ডসহ ৪ ইউনিয়ন।
এসব রেডজানে নিত্যপণ্যের দোকান ও ব্যাংক ব্যতীত অন্য সকল প্রকার দোকান-পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা। রেডজোন ও ইয়োলো জোনভূক্ত এলাকায় যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রন করার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার ঢিলেঢালাভাবে সব ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এক জোনে বসবাসকারীরা অন্য জোনে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু তদারকি না থাকায় আগের মতোই চলছে সবকিছু।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আজ বিকেল ৩টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী লকডাউন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে অবগত করবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কাছ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা আগামীকাল থেকে পুরোপুরি কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারবো। আমাদের আশপাশের অনেক জেলা এখনও লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়নি। সব মিলে আজ প্রথমদিন একটু ঠিলে ঢালাভাবে লকডাউন পালন হচ্ছে।