চৌদ্দগ্রামে সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে

*অব্যবস্থাপনায় চৌদ্দগ্রাম বিসিক শিল্পনগরী* *দুর্ভোগ চরমে* *নেই পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা* *সড়কে বড় বড় গর্ত* *সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকে* *চারপাশে দেয়াল নেই* *চোরের উৎপাত বৃদ্ধি* *অফিসে আসেন না ডিজিএম*

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, মোঃ আবদুল মান্নান, ১১ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে চরম অব্যবস্থায় বিসিক শিল্পনগরী। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকে। এতে ফ্যাক্টরী মালিক ও শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিসিক ডিজিএম হাসান আসিফ চৌধুরী কর্মস্থলে না আসায় দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।

বিসিক শিল্পনগরী অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিসিক শিল্পনগরী চৌদ্দগ্রামে ৮৩ প্লটের মধ্যে ৬৭টি ফ্যাক্টরী অবস্থিত। এরমধ্যে ৫১ ফ্যাক্টরী চালু রয়েছে। ৫টি ফ্যাক্টরী চালুর জন্য নির্মাণ কাজ চলছে। বন্ধ রয়েছে ১১টি ফ্যাক্টরী।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বিসিক শিল্পনগরীর সড়কগুলোতে অসংখ্য গর্ত রয়েছে। গর্তে জমে আছে হাঁটু পরিমাণ পানি। কোন কোন স্থানে কাঁদা জমে ধানের চারা লাগানোর মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ফ্যাক্টরীগুলোর বর্জ্য বিসিক থেকে বাইরে যাচ্ছে না। সড়কের ড্রেন ভরাট হয়ে আগাছা উঠে গেছে।

এছাড়া বিসিকের চারপাশে নেই দেয়াল। ফলে প্রতিরাতেই চোরের উৎপাত চলছে। সংঘবদ্ধ চোরচক্র একটি মবিল ফ্যাক্টরীর অফিসের চেয়ার-টেবিল পর্যন্ত চুরি করে নিয়েছে। চলমান ফ্যাক্টরীগুলো থেকে সরকার লাখ লাখ টাকা ভ্যাট এবং সার্ভিস চার্জ আদায় করলেও বিসিক শিল্পনগরীর উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেক ফ্যাক্টরীর মালিকের।

বিসিকের বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে কর্মরত শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, জাকির হোসেনের মালিকানাধীন ফ্যাক্টরীর সিলিকন যত্রতত্র সড়কে ফেলে রাখায় ড্রেন ভরাট হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় হেঁটে যাতায়াতের সময় পায়ে পানি লাগলে কিছুদিন পর পা ক্ষত হয়ে যায়। বিসিক অফিস থেকে বারবার বললেও জাকির হোসেন সিলিকন সরানোর ব্যবস্থা করেনি। তাছাড়া বিসিক ডিজিএম অফিসে না আসায় দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। স্বয়ং ডিজিএম অফিসের বাইরের সড়কে শ্যাওলা উঠে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

মোশারেফ হোসেন নামে একজন অভিযোগ করেন, ‘এস্টেট অফিসার নিয়মিত অফিস না করায় আমরা সমস্যার কথাগুলো ওনার সাথে শেয়ার করতে পারি না। অথবা ওনি কখনো অফিসে আসলেও আমাদের ভাল-মন্দ জানতে চায় না। এ অবস্থায় আমরা অসহায় এবং সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বিসিকের ব্যবসায়ী মোঃ সোলায়মান কোম্পানী বলেন, ‘বিসিক থেকে সড়কের কোন উন্নয়ন না করায় আমরা নিজস্ব উদ্যোগে ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ করে ইট ফেলে সড়কের উন্নয়ন করেছি। কিন্তু স্থায়ীভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সড়কের উন্নয়ন না করায় প্রতি নিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে’।

ব্যবসায়ী নুর হোসেন বলেন, ‘বিসিক সড়ক ও ড্রেনেজ সংস্কার না করায় ভোগান্তির কারণে কোন ভালো ব্যবসায়ী এখানে আসতে চায় না। ফলে আমরা প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিসিক শিল্পনগরীর ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম হাসান আসিফ চৌধুরী বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, ‘বিসিকের সমস্যাগুলো ধাপে ধাপে শেষ করা হবে। তবে কিছুদিনের সড়কের উন্নয়নে টেন্ডার হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *