গৃহপরিচারিকাকে গরম পানিতে ঝলসে দেন সাবেক অধ্যক্ষের স্ত্রী
কুমিল্লা প্রতিনিধি, আবদুল মান্নান, ০৪ জানুয়ারি, ২০২৩ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের এক সাবেক অধ্যক্ষের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১২ বছর বয়সী গৃহপরিচারিকা শিশুকে গায়ে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলছে গেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে মেয়েটি দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে। কুমিল্লা নগরী লাগোয়া ধর্মপুর পূর্ব দৌলতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ।
পূর্ব দৌলতপুর এলাকার এস আর টি প্যালেস নামের একটি বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহের। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তাহমিনা তুহিন তার স্ত্রী। ভুক্তভোগী মেয়েটির বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায়।
ভুক্তভোগী জানায়, আবু তাহেরের মেয়ে ফাহমিদা তিমুর ঢাকার বাসা ও আবু তাহেরের কুমিল্লার বাসায় চার বছর ধরে কাজ করছে সে। কাজে দেরি হলে তাহেরের স্ত্রী তাহমিনা ও মেয়ে ফাহমিদা জালি বেত দিয়ে মারধর করেন এবং গায়ে গরম পানি ঢালেন। গরম পানি ঢালায় তার পা ঝলসে গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গরম পানি ঢালতে চাইলে দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে সে। পরে পাশেই ওই কলেজের মেয়েদের হোস্টেলে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোস্টেলের একজন বলেন, ‘আমরা ওপরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনি। পরে দেখি ছোট একটি মেয়ে আমাদের রুমে প্রবেশ করে আশ্রয় চাচ্ছে। তার পা ঝলসানো ছিল। পরে আমরা পুলিশে খবর জানাই। মঙ্গলবার রাতে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত তাহমিনা তুহিন।
তবে আবু তাহের বলেন, ‘মেয়েটি সম্পর্কে আমাদের আত্মীয়। তার বাড়ি আমার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি দেবীদ্বার এলাকায়। আমি ও আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ। কিছুদিন আগেও আইসিইউতে ছিলাম। ঘটনার সময় আমি বাইরে ছিলাম। আমার স্ত্রী জানিয়েছেন, তাকে মারধর করা হয়নি। পা পিছলে পড়ে যাওয়ায় তার পায়ে গরম পানি পড়েছিল। পাশের হোস্টেলের একটি মেয়ে বিষয়টিকে বড় করেছে।
ওসি মোর্শেদ বলেন, ‘মেয়েটির পা ঝলসে গেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বর্তমানে হাসপাতালে মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।