৩৫ বছরের নারী পাচ্ছে বয়স্ক ভাতা! শৈলকুপা সমাজসেবা কর্মকর্তার তেলেসমাতি দুর্নীতি ও বিভিন্ন অপকর্ম থামছে না
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ তারেক জাহিদুর রহমান, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে চলছে তেলেস মাতি কারবার। ৩৫ বছর নারীর জাল ভোটার আইডি কার্ড বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বয়স্ক ভাতা। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে জাল আইডি বানিয়ে শৈলকুপার জালশুকা গ্রামের মুসলিমা খাতুন নামে এক নারী বয়স্কভাতা গ্রহণ করছেন দীর্ঘদিন। তার বই নম্বর হাকিম/ ৫২০। হিসাব নং-৪৩৬। মুসলিমার বয়স্কভাতা পরিশোধ বইতে জাতীয় পরিচিতি নম্বর- ৪৪১৮০৫০৮৫২৪৬৭ এবং জন্ম তারিখ ১৯৫০ সালের ৫ অক্টোবর রয়েছে।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের আইডি নং-৪৪০১৪৬৮৫২৪২০। আর জন্ম তারিখ ১৯৮২ সালের ৫ অক্টোবর। সে মোতাবেক মুসলিমার বয়স এখন ৩৫ বছর। মুসলিমা জালশুকা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলী’র স্ত্রী। স্বামী জাহাঙ্গীর ১৯৮১ সালের ১ জানুয়ারীতে জন্মগ্রহণ করেন। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা সমাজসেবা অফিস কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ ও খুলুমবাড়িয়া কৃষি ব্যাংক শাখার পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম মিলিত ভাবে এই অপকর্ম করেছেন। এ ভাবে তারা অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। পিয়ন জাহাঙ্গীর আলী টাকার বিনিময়ে সুন্দরী খাতুন নামে এক ভাতাভোগীর মৃত্যু হলে তাঁর স্থলে মুসলিমা খাতুনের নাম অর্ন্তভুক্ত করেন।
জাহাঙ্গীর সমাজসেবা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ডাক্তারী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ ছাড়াই তার ছেলে শুভ হোসেনের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা’র কার্ড বানিয়েছেন। যার বই নং হাকিম/ ১৭১২, কার্ড নং-১১৬। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুসলিমা খাতুনের নামে বয়স্কভাতার কার্ড হলেও তিনি ভাতা তুলতে যান না। লোকলজ্জা এড়াতে মুসলিমা তার স্বামীকে দিয়ে কৌশলে ভাতার টাকা উত্তোলন করে থাকেন।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জিকু জানান, সমাজসেবা কর্মকর্তা নিজেই দুর্নীতিবাজ এবং বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। মুসলিমা খাতুন ও শুভর প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলেও চেয়ারম্যান জানান।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ের যাচাই বাছাই করে যে সকল কাগজপত্র অফিসে পাঠানো হয় সেগুলোই অনুমোদন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া ইস্যুকৃত বই দুটির সমস্ত তথ্যাদি অধিকতর তদন্ত করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।