রাতের আধারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি, একরামুল হক, ০৮ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : গাইবান্ধা সদর এলাকার খোলাহাটি ইউনিয়নের পুর্ব কোমরনই গ্রামে রাতের আধারে পুকুরে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ নিধোনের মত অমানবিক ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিন আজ সোমবার (৮ জুন) সকাল ১০ টার দিকে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, বড় বড় আকৃতির রুই, কার্ফ ও কাতলসহ অসংখ্য মাছ পানিতে ভেসে আছে। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বিদ্যুৎ পাম্প মালিক সমিতি‘র সাধারণ সম্পাদক আনাউর রহমান অনু মিয়া এক বিঘা পুকুরে প্রায় চার-পাচঁ বছর ধরে শখের বশে এই মাছ গুলো লালন পালন করছিলেন তার আমেরিকা প্রবাসী মেয়ে ও মেয়ের জামাই আসবে বলে।
কিন্তু দুর্বৃত্তরা পুকুরে বিষ প্রয়োগে সেই স্বপ্ন পুরন করার আগেই মাছ গুলোকে হত্যা করে। এসময় একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, গতকাল রাতে যারা পুকুরে বিষ প্রয়োগে এই অবলা প্রাণী গুলোকে হত্যা করেছে, তাদেরকে দুনিয়াতেই কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
পুর্ব কোমরনই গ্রামের ময়নুল হোসেন বলেন, আমি সকালে চাতালে কাজ করতে এসে দেখি পুকুরে সব বড় বড় মাছগুলো ভেসে আছে। দেখা মাত্রই পুকুর মালিক অনু মিয়াকে জানালে তিনি পুকুর পাড়ে এসে ঘটনাটি দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তবে কে বা কাহারা বিষ প্রয়োগে এই মাছগুলো হত্যা করেছে এখনো তা জানা যায়নি।
পুর্ব কোমরনই গ্রামের চান্দু মিয়ার স্ত্রী আইরিন বেগম বলেন, সকালে নামাজ শেষে রাস্তায় হাটতে বের হয়ে পুকুরে মাছগুলো ভেসে থাকতে দেখি। এই বাড়ির ছেলে-মেয়ে সবাই বাড়ির বাহিরে থাকে। রাতের আধারে কোন দুর্বৃত্তের দল পুকুরে বিষ দিয়ে এই মাছগুলো হত্যা করে থাকতে পারেন বলে তিনি জানান।
এ ঘটনায় বিদ্যুৎ পাম্প মালিক সমিতির সেক্রেটারি এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনাউর রহমান অনু মিয়া বলেন, আমি দীর্ঘ চার পাঁচ বছরের বেশি সময় যাবত এই মাছগুলো চাষ করছি। সকাল ৭ টার দিকে চাতালের কর্মী ময়নুল এসে ঘটনা জানালে আমি তাতক্ষণিক ভাবে পুকুরপাড়ে গিয়ে দেখি বড় বড় মাছগুলো সব মরে ভেসে উঠেছে।
এই মাছগুলো আমার মেয়ে এবং মেয়ের জামাইয়ের জন্য খুব যত্নে লালন-পালন করছিলাম। দীর্ঘ আট বছর থেকে তারা আমেরিকায় বসবাস করছে। সম্প্রতি তাদের আসার কথা রয়েছে জন্য এই মাছগুলো রেখে দিয়েছিলাম। এই অবলা প্রাণী যারা হত্যা করেছে, প্রশাসনের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস অফিসার সঞ্জয় কুমার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এ প্রতিবেদককে জানান, ধারণা করা হচ্ছে যে, বিষ প্রয়োগ বা গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে মাছগুলো নিধন করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে বিস্তারিত বলা যাবে।
গাইবান্ধা সদর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ঘটনা শোনা মাত্রই এস আই অনন্ত কুমারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।