মাদারীপুরে সন্তানদের সম্পত্তি লিখে দেয়ার পরেও চিকিৎসা হচ্ছে না বাবার
মাদারীপুর প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : মাদারীপুরে এক সময়ের তাজ বিড়ি ফ্যাক্টরীর মালিক ও কোটিপতি ব্যবসায়ী নুরু মাতুব্বর ৪ সন্তানকে বিঘার পর বিঘা সম্পত্তি লিখে দেয়ার পরেও পরিবারের জ্বালাতনে গত ১৫ বছর ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দুবেলা খাবার খেতেন। সেই ব্যক্তি চিকিৎসার অভাবে মুমুর্ষ অবস্থায় সদর হাসপাতালের ফ্লোরে পড়ে আছেন। অথচ, ৪দিনেও খোঁজ নিতে আসেননি কেউ। চিকিৎসকরা বলছেন, উন্নত চিকিৎসা ছাড়া স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারবেননা নুর হোসেন। এদিকে সন্তানদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি বৃদ্ধ ওই বাবার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ফ্লোরে গত রোববার থেকে মুমুর্ষ অবস্থায় পড়ে আছেন সদর উপজেলার ঝিকরহাটি গ্রামের নুরু মাতুব্বর। অজ্ঞাত এক ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা চললেও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে তার। অথচ, ৪দিনেও পরিবার থেকে ৬০ বছর বয়সী বাবার কোন খোঁজ নিতে আসেননি কেউ। দ্রুত তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানান কর্তৃব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ইমরানুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় চরমুগরিয়া এলাকার ‘তাজ বিড়ি ফ্যাক্টরী। পরে ফ্যাক্টরীর মালিক নরু মাতুব্বর বাড়ি বিক্রি করে ছেলেকে লন্ডন পাঠান পড়াশুনা করাতে। লন্ডন থেকে ফিরে এসে ছেলে বিয়ে করে ঢাকায় ব্যবসা করছেন। পরে নুরু মাতুব্বরের বিঘার পর বিঘা জমি তিন মেয়ে ও এক ছেলেকে লিখে দেয়ার পাশাপাশি তাদের সভ্রান্ত পরিবারে বিয়েও দেন।
অথচ, গত ১৫ বছর ধরে বাড়িছাড়া ওই বাবা। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে খাবার সংগ্রহ করলেও আজ চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুশয্যা। এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন এলাকাবাসী। অসুস্থ্য হওয়ার পূর্বে তিনি চরমুগুরিয়া বাজার এলাকায় একটি দোকানে রাতে পাহাদার হিসেবে কাজ করতেন। হাসপাতালের অন্যান্য রোগীরা বৃদ্ধাকে খাবার দিচ্ছে ও আদর আপ্যায়ন করছে।
নুরু মাতুব্বরের মেয়ে শামসুর নাহার চৈতী বলেন, পারিবারিক ঝামেলার কারনে বাবার সাথে যোগাযোগ অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। বাবা তার মতে করে থাকে আমারা মাকে নিয়ে আমাদের মত করে থাকি।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, এক বৃদ্ধ কয়েকদিন ধরে সদর হাসপাতালে অসুস্থ্য অবস্থায় পড়ে আছে। তার খোঁজ খবর নিতে কেউ আসে না শুনে আমি সকালে হাসাপাতালে তাকে দেখতে যাই। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়ে আসি। তার ভরণপোষণ ও খোঁজ না নেয়ায় সন্তানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।