মাদারীপুরে পরিবেশ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন কে তোয়াক্কা না করে চলছে ইট ভাটা
মাদারীপুর প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ০৫ জানুয়ারি ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ইট ভাটা ব্যাবসার এখন জমজমাট মৌসুম তাই সব ভাটাগুলোয় চলছে পুরোদমে ইট উৎপান। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩, অমান্য করেই চলছে ভাটাগুলো, আইন অনুসারে ভাটা স্থাপনে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স নেয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে আইনের শর্ত পূরণ না হওয়ায় বিগত কয়েক বছর ধরে নতুন লাইসেন্স কিংবা পুরোনোগুলোর নবায়ন করছেনা প্রশাসন। পরিবেশগত ছাড়পত্র করোই নেই, কারো কারো কাছে অন্যান্ন কাগজ পত্র থাকলেও নেই নবায়ন, তারপরেও থেমে নেই ইটাভাটার কার্যক্রম।
নিয়ম নিতি উপেক্ষা করে অপরিকল্পিতভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অধিকাংশ ইটভাটাগুলোতে চলছে অনিয়ম, পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, বাঁশের মুড়া, এর কারণে প্রতিবছর কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, উজাড় হচ্ছে ফসলি জমি, হুমকির মধ্যে পড়েছে মানুষের স্বাস্থ্য, চোখের পলকে গিলে খাচ্ছে সোনাফলা আবাদি জমি। জমির টপ-সয়েল কেটে ইটভাটাটিতে ব্যাবহার করায় উর্বরতা হারিয়ে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে শত শত একর জমির। ইটভাটা মালিকদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা শিশু শ্রম, ফলে ধ্বংস হচ্ছে শিশুর ভবিষ্যত, এছাড়া প্রতিদিন শ’শ’অবৈধ ট্রলি ও ট্রাক্টরে অতিরিক্ত ইট ও মাটি বহনের ফলে ভেঙে চৌচির হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাট। কিন্তু দেখার বা বলার যেন কেউ নেই। ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। তাই পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে প্রশাসনের নজরদারির পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগ দাবি, স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মেসার্স নাবিল ব্রিকস্ প্রোঃ-মোঃমোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল হাওলাদার, মের্সাস অগ্রণী ব্রিকস্ প্রোঃ-মোঃ আলমগীর খান কাজিরটেক ফেরীঘাট মাদারীপুর এ, আর জি ব্রিকস্ প্রোঃ-আঃরশিদ গৌরা, এম এস ব্রিকস্, প্রোঃ-মোঃ হাবিবুর রহমান পাঁচখোলা জাজিরা মাদারীপুর, মোল্লা ব্রিকস প্রোঃ-ইদ্রিস আলী মেসার্স কে এইচ ব্রিকস্-২ মাদারীপুর, এম পি ব্রিকস্, কে এস ব্রিকস্ চরলক্ষীপুর ছিলারচর, কে এম বি ব্রিকস্ যাদুয়ার চর শিবচর, মের্সাস হাসান ব্রিকস প্রোঃ-মোঃ কামরুল হাসান মোল্লার হাট কালকিনি এসব সহ, অনিয়মকারী সকল ভাটার মালিকদের হাত এতটাই লম্বা যে, তাদের নাগাল পাওয়া যেন দুঃসাধ্য এরা স্থানীয় ও রাজনীতিক ভাবে প্রভাবশালী হওয়া এবং মালিক গন প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নিশ্চুপ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের নিয়মানুযায়ী প্রথম শ্রেণীর দু-একটি ভাটায় কয়লা ব্যাবহার হলেও অবাধ বেপরোয়া ভাবে ইট উৎপাদন করছে ইটভাটা মালিকরা। কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তাদের অনিয়ম। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ইটভাটাগুলো। অদৃশ্য শক্তির বলে পার পেয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। তবে এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিকদের সাথে কথা বলতে চাইলে সঠিকভাবে কোন জবাব দিচ্ছেন না তারা, তাদের অনেকের দাবি ডিসি অফিসের এল আর ফান্ডে টাকা পয়সা দিয়ে ও নিয়মিত যোগাযোগ রেখেই তারা ইটভাটা চালাচ্ছেন। ইটভাটার অনিয়মের বিষয়ে অবগত করলে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন।