মাদারীপুরে ছাগল চুরির সেই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
মাদারীপুর প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : মাদারীপুরে ছাগল চুরির মামলায় অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তুহিন দর্জীকে পদ থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তুহিন দর্জী শহরের ইটেরপুল এলাকার জেলা ইমারত শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সদর ঘটমাঝি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির দর্জীর ছেলে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার পখিরা এলাকা থেকে একটি প্রাইভেটকারে স্থানীয় লোকমান মালোতের গৃহপালিত একটি ছাগল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে ধাওয়া দিলে তারা সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন। পরে টহল পুলিশকে জানালে পুলিশ চুরি হওয়া ছাগল বহন করা প্রাইভেটকারটি গতিরোধ করে।
পরে ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দর্জীসহ তার চার সহযোগী জুবায়ের হাওলাদার, রানা বেপারী, রবিউল ইসলাম ও মাহবুব তালুকদারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ সময় চুরির কাজে ব্যবহৃত ওই প্রাইভেটকার জব্দ ও ছাগল উদ্ধার করা হয়। মামলা হওয়ার একদিন পরে ছাত্রলীগ নেতা তুহিনসহ তার চার সহযোগীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপংকর রোয়াজা বলেন, মঙ্গলবার এই ছাগল চুরির মামলার শুনানি ছিল। আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে আমরা তার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করি। কারণ মামলার বাদী এজাহারে আরও ৫টি গৃহপালিত ছাগল একই কায়দায় চুরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এই ছাগল চোর চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সেই বিষয়টি তদন্ত করতেই আমরা আসামি তুহিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাই।
কিন্তু আদালতে আসামির পক্ষের লোকজন মামলার বাদীকে হাজির করে। সেখানে বাদী আসামির জামিন দেওয়া হলে তার আপত্তি নেই বলে আদালতকে জানায়। এ কারণে আদালত রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে আসামিকে জেলহাজতে বসেই জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি নেয়। তবে আদালত আসামি পক্ষের জামিন আবেদন খারিজ করে পুনরায় শুনানি দিন ঠিক করেন।
এসআই দিপংকর রোয়াজা আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দর্জীর নামে সদর থানায় মাদক, বিস্ফোরকসহ আরও ৭টি মামলা আছে। বর্তমানে আসামি তুহিনসহ তার সহকারীরা কারাগারে আছে। প্রধান আসামি তুহিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের অন্যদের খুঁজে বের করা হবে।
জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেইন অনিক বলেন, ‘ছাগল চুরির ঘটনাটি সারাদেশে সমালোচিত হয়েছে। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তুহিন গ্রেফতার হওয়ার দিনই আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে তার বহিষ্কার চেয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছি। চিঠি পাঠানো ৬ দিন পর মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষরিত ছাত্রলীগের একটি প্যাডে তুহিনকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়।