থানার সামনে সংঘর্ষ, ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলেন কাদের মির্জা
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূংফুল হায়দার চৌধুরী, ১৬ এপ্রিল, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার মূল ফটকের সামনে উপজেল আ.লীগ অনুসারী ও মির্জা কাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছে সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টার সময় দিলাম। এ সময়ের মধ্যে ডিসি,এসপি, এডিশন্যাল এসপি, ইউএনও, এসিল্যান্ড,ওসি,পরিদর্শক (তদন্ত) কে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে এবং উপজেলা আ.লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খান,সাধারণ সম্পাদক নুরনবী,রুমেল, সবুজ, কচি, শাহীন চেয়ারম্যান, রাজ্জাক চেয়ারম্যানকে অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনেন, না হলে কোম্পানীগঞ্জে শান্তি আসবে না। আমি ২৪ ঘন্টার সময় দিলাম। ২৪ ঘন্টার ভিতর যদি এটার কিছু না হয়। ২৪ ঘন্টার পরে আমি জনগণকে সাথে নিয়ে আমি রাস্তায় নামব। এ সময় তিনি আটক তার অনুসারী সাবেক কাউন্সিলর শিমুলকে এক ঘন্টার মধ্যে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তার ছেলে তাশিক মির্জা কাদেরের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পুলিশের সামনে বসে পকেটে অস্ত্র, এ কোন দেশ, এ দেশে কি আইনের শাসন নেই, ইউএনওর সামনে বসে পকেটে অস্ত্র, এ দেশে কি আইনের শাসন নেই,মানবাধিকার সংস্থা নেই। আজকে আমাকে ফেইসবুকে কথা বলতে দেয়া হয়না। অথচ আমার প্রতিপক্ষরা ফেইসবুকে কথা বলতে পারতেছে। আমি পারতেছেনা। এ গুলো কে করেছে , ওবায়দুল কাদের সাহেব। তার বউয়ের অপকর্মকে ঢাকার জন্য। সেই এগুলো করতেছে, না হলে কে করতেছে।
কাদের মির্জা বলেন, আজকে তারা আমার পরিবারকে ধ্বংস করতে চায়। ওসি তুমি মিথ্যা কথা বল। মুনাফিক দশ লক্ষ টাকা খেয়ে আজকে প্রতারনা করছ। তুমি আমার ছেলেদেরকে জেলে দেওয়ার ভয় দেখাও। তোমাকে এ সাহস কে দিয়েছে। বাজে লোক। সাবধান, সাবধান, সাবধান করে দিচ্ছি তোমাদেরকে। আমাকে ছিননা,ছিননা, ছিনবা পরে। আমি কারো তোয়াক্কা করিনা। আল্লাহ ছাড়া, জনগণ ছাড়া কাউকে ভয় করিনা। আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। আমার পরিবার প্রয়োজনে এই পথে নিজেদেরকে বিসর্জন দিবো। তার পরে কোন অপরাধী, অপরাজনীতি, সন্ত্রাসী,অস্ত্রবাজ, ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তার সাথে কোন আপোস করবনা।
উল্লেখ্য, এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনে কাদের মির্জা ও বাদল অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে কোম্পানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাদের মির্জার অনুসারীদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখান থেকে তারা পৌর ভবনের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এর কিছুক্ষণ পর মেয়র কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জার নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক থানার সামনে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এসময় বাদল গ্রুপের আরমান চৌধুরী, কাদের মির্জার ভাগিনা হুমায়ুন রশিদ মিরাজ, যুবলীগের নজরুল ইসলাম হিমেল, ছাত্রলীগ নেতা আদনান পাশা জয়, ওমর ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাহাদুর, কাদের মির্জার ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাশিক, পৌরসভা ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ জিসান ও চরপার্বতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন আহত হয়েছেন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর বসুরহাটে উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।