একই স্থানে আ’লীগের দুগ্রুপের সভা আহবান; ১৪৪ ধারা জারি
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর মাইজদীতে একই স্থানে আ’লীগের দুই গ্রুপের সভা আহবান করায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলের দিকে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। উভয় পক্ষের কর্মসূচি পালন বন্ধ রাখার লক্ষে মঙ্গলবার সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। জানাযায়, জেলা শহর মাইজদীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নোয়াখালী পৌর মেয়র শহীদ উল্যা খাঁন সহেল আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে কটুক্তি করার প্রতিবাদে সমাবেশ আহবান করে (২৬ জানুয়ারি) পরে একইস্থানে জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক,নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি একরামুল করিম চৌধুরী সমর্থিত নেতারা সমাবেশ আহবান করে। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। শান্তি ভঙ্গের আশংকা দেখা দেওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেন।
উল্লেখ্য,গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটের সময় নোয়াখালী জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক, নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী তার ভেরিফাইড ফেইসবুক আইডি থেকে ফেইসবুক লাইভে এসে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক,সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরিবারকে রাজাকারের পরিবার বলে আখ্যায়িত করে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এসব নিয়ে কথা বলা শুরু করবেন বলে হুমকি দিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। পরে তিনি ভিডিওটি সরিয়ে নিলেও মহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই ভিডিও ভাইরাল হয়। এর প্রতিবাদে ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জের দলীয় নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রতিবাদ সমাবেশ,বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করে তারা। নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো.আলমগীর হোসেন ১৪৪ নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আরও খবরঃ-
ফের কোম্পানীগঞ্জে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা
**ওবায়দুল কাদের সাহেব চুপ করে বসে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেত পারবেন না : মেয়র আবদুল কাদের মির্জা**
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ফের হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগ। জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী বাংলাদেশ আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে রাজাকার পরিবারের সদস্য বলায় দলীয় হাই কমান্ড কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার প্রতিবাদে এই হরতাল কর্মসূচি পালন করবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগ। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্তরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা দেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। যা আগামী রোববার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে। হরতাল চলাকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্ধ থাকবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগ তাদের দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে এই হরতাল পালন করেব।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল প্রমূখ। বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি কি হোতে চান। আপনি বাংলাদেশের আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। আপনার এলাকায় ত্যাগী কর্মীরা ঘরে শুতে পারেনা, তারা গুলি খেতে হয়, তারা হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে। আপনি সেখানে বসে কি করছেন? চুপ করে বসে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেত পারবেন না। শুনতে খারাপ লাগবে, কি করবেন আপনি। জেলে দিবেন, সেটার অভ্যাস আমাদের অনেক আগের আছে। আপনার থেকে বেশি খাটছি। মেরে ফেলবেন, কবরের জায়গা দেখিয়ে দিয়েছি। আপনার কাছে দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি। আপনি বলছেন আমাকে এখান দিয়ে দিও, আমি আপনার পাশে দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি। আপনাকে ভালোবাসি, এখনো আপনি আমার রাজনৈতিক আদর্শ। এখনো কোম্পানীগঞ্জের নেতা কর্মীরা আপনাকে শ্রদ্ধা করে। শনিবারের পর থেকে আর এই শ্রদ্ধা থাকবে না। স্পষ্ট ভাষায় বললাম। কি বুঝাতেন চান আপনি। আজকে আপনি একটা দুঃচরিত্র, মাদক সম্রাটকে, আপনি আজকে আশ্রয় দিচ্ছেন, প্রশ্রয় দিচ্ছেন। কেউ না থাকলে আমি আবদুল কাদের মির্জা রাস্তায় একা থাকবো, প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করবো। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্তরে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমি নেতার কথা বলব না উনি কোনো রকমের কথাবার্তা বলছে না। আমি আজ স্পষ্ট ভাষায় বলব, আপনারা কী জানেন আমি রাজাকারের সন্তান? ওবায়দুল কাদের সাহেব উনি বড় নেতা। উনি ওনার দৃষ্টিকোণ থেকে এটাকে কোনভাবে নিয়েছে, আমি জানি না। আমাদেরকে প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না, আমাদেরকে কর্মসূচী পালন করতে দিচ্ছে না। রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে। আমি কারও রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না। আমি কার খাই না পরি? আমরা কি কথা বলতে পারবো না। থামিয়ে দিবেন, থামিয়ে দিতে পারবেন না। একরাম চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। আমাদের দাবি মানতে হবে। নোয়াখালী আ’লীগের প্রস্তাবিত কমিটি বাতিল করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, একরাম চৌধুরীকে নোয়াখালীতে টেন্ডারবাজি, চাকরি বাণিজ্য, লুটপাট করছে। আমাদের ত্যাগী কর্মীদের নানা ভাবে হয়রানি করছে। কেউ কি দেখার নেই। আগামী রবিবার সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত আধাবেলা কোমপানীগরজ্ঞর সর্বত্র হরতাল এবং এই হরতালের পরেই আমরা ঢাকা ভিত্তিক কর্মসূচী দিব। আমি ইতমধ্যে নোয়াখালীর নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখান থেকে কথা বললে নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছায় না। আজকে অনেকে বিক্রি হয়ে গেছে। যারা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকে তারাও বিক্রি হয়ে গেছে। তারা সঠিক কথা তুলে ধরছে না। আমার পরিবারের কেউ রাজাকার ছিল বলেন? আমার আব্বা হেডমাস্টার ছিলেন। উনি কেলবকাটা ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর পাশের রুমে থাকতেন।
তিনি আরো বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব তাকে ক্ষমা করতে পারে। বারবার ওনার ক্ষমার কারণে সে আজকে এত বড় উদ্ধত্ব দেখাচ্ছে। এতবড় উদ্ধতা দেখিয়েছে, ওবায়দুল কাদেরের গালে গালে জুতা মার তালে তালে। এই স্লোগান কে দিয়েছিল নোয়াখালী অফিসের সামনে? একরামুল করিম চৌধুরী দিছে না? তারপরে ওবায়দুল কাদের সাহেবকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে একরামুল কাদের চৌধুরী। করে নাই? আমাকেও গালিগালাজ করেছে। আমি বাড়িতে ভাত খেতে বসেছি, সে আমাকে মোবাইলে গালিগালাজ করেছে। আমি উত্তর দিয়েছি। এই একরাম সেই একরাম যে ৯৬ সালে বসুরহাট আমাদের আওয়ামী লীগের যে অফিস সে অফিসে রেস্ট নিতাম, সে আমার পায়ের নিচে বসে জিগ্ঞাসা করেছে, মির্জা ভাই ভোটের অবস্থা কেমন। তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনেক স্কেন্ডাল আছে। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী প্রমূখ।