ইত্তেফাক এর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা, পুলিশের গরিমশি

ক্রাইম রিপোর্ট (নিউজ ডেস্ক), ০৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দৈনিক ইত্তেফাক এর মালিক এবং সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মন্জু, তার স্ত্রী তাসমিমা হোসেন, নির্বাহী পরিচালক  মহিবুল আহসান, রাজিব আহম্মেদ (ব্যবস্থাপক (প্রশাসন)সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বকেয়া বেতন-ভাতা না দেওয়ায়, সাবেক এডিটিং এ্যাসিস্টেন্স (সম্পাদনা সহকারী) মো: শাহজাহান মিয়া, পিতা- মো : ইয়াছিন উদ্দিন, গ্রাম- বড় কুষ্টিয়া, ডাকঘর- তেরশ্রী, থানা- ঘিওর, জেলা- মানিকগন্জ, বিজ্ঞ ৩য় শ্রম আদালত, ঢাকায় মামলা দায়ের করেন। যাহার বি.এল.এ. (মজুরী) মামলা নং ১২৬৩/২০১৯, তারিখ: ০৭/০৮/২০১৯। পরবর্তীতে উক্ত রায় নিয়ে মামলার বাদী রায় কার্যকরের জন্য বি.এল.এ (ফৌজদারী) মোকদ্দমা নং ১৩২/২০২২, তারিখ: ১৭/০৫/২০২২ ইংরেজী। ধারা- বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩২ (১) মামলা মোতাবেক দায়ের করেন। অত্র মামলায় দৈনিক ইত্তেফাকের মালিক-সম্পাদকসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। যাহার তারিখ- ২৯/০৯/২০২৪ ইংরেজী।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মো: শাহজাহান মিয়া বিবাদীর বহুল প্রচারিত দৈইনিক ইত্তেফাক প্রতিষ্ঠানে বিগত ০১-০৬-২০০৬ ইং তারিখে “এডিটিং এ্যাসিস্ট্যান্ট” (সম্পাদনা সহকারী) (৪র্থ গ্রেড) (৫ম ওয়েজ বোর্ড) মোতাবেক পদবীতে ১০,৫৩০/- টাকা মাসিক বেতনে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। উক্ত নিয়োগ পত্র মোতাবেক দরখাস্তকারী কাজে যোগদান করেন। কর্তৃপক্ষ দরখাস্তকারীর নামে একটি পরিচয় পত্র ইস্যু করেন। দরখাস্তকারীর সর্বশেষ মাসিক মূল মজুরী ১৬,৭৮৬/- টাকা এবং মোট মজুরী ২৪,৬০০০/- টাকা। (৪র্থ গ্রেড) (৭ম ওয়েজ বোর্ড) প্রাপ্ত হতেন। তিনি বাংলাদেশ এম আইন-২০০৬ এর ২(৬৫) ধারা মোতাবেক অমিক তাহার ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক ও তদারকি মূলক কোন ক্ষমতা ছিল না, কোন কারণ ছাড়াই ৩ নং ও ৪নং বিবাদীর যৌথ স্বাক্ষরে দরখাস্তকারীকে ০১-০৭-২০১৯ ইং তারিখে চাকুরী হইতে লিখিতভাবে টার্মিনেট বা বাদ দিয়ে দেন। উক্ত টার্মিনেশন পত্রে হিসাব বিভাগ হইতে পাওনাদী গ্রহণ করার জন্য দরখাস্তকারীকে নির্দেশ দেওয়া হয়। উক্ত নির্দেশ মোতাবেক দরখাস্তকারী হিসাব বিভাগে যান কিন্তু তাহাকে পাওনাদী প্রদান করা হয় নাই।

টার্মিনেশন জনিত তাহার প্রাপ্য পাওনাদী নিম্নরূপ :- ক) নোটিশ পে ৪ মাস ২৪,৬০০/-X ৪= ৯৮,৪০০,০০, খ) গ্রাচ্যুইটি ১৩ বছর চাকুরী করিবার জন্য ১৬,৭৮৬/- x ১৩ x ২ = ৪,৩৬,৪৩৬.০০, গ) পত্রিকার সুবিধা ২০১৩ হইতে জুন ২০১৯ পর্যন্ত ৫০০/- ১২০ ৬.৫=৩৯,০০০,০০, ঘ) অর্জিত ছুটি ৯০ দিন ৩ মাস x ২৪,৬০০/- ৭৩,৮০০.০০, ঙ) বিনোদন ছুটি ৬০ দিন ২ মাস X ২৪,৬০০/- ৪৯,২০০,০০, চ) নাইট এ্যালাউন্স (নৈশ ভাতা) সুবিধা ২০১৩ হইতে জুন ২০১৯ পর্যন্ত ৬৬৮/-প্রতি মাস x ১২ X ৬.৫ বছর = ৫২,১০৪.০০, ছ) পিএফ ৭২০০ x ২=১৪৪০০ × ১৩ ১,৮৭,২০০,০০, মোট পাওনা = ৯,৩৬,১৪০.০০ (নয় লক্ষ ছত্রিশ হাজার একশত চল্লিশ টাকা মাত্র) তিনি উক্ত টার্মিনেশন জনিত পাওনাদীর জন্য ২নং প্রতিপক্ষের সাথে একাধিকবার দেখা করাসহ সর্বশেষ ৩০/০৭/২০১৯ ইং তারিখ দেখা করার পরও শুধু আশ্বাস প্রদান করেন কিন্তু পাওনানী দেন নাই। পরবর্তীতে তিনি ১৩২(৫) ধারার বিধান মতে প্রতিপক্ষ গণের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিচার করার এখতিয়ার তৃতীয় শ্রম আদালত হওয়ায় বাদী টার্মিনেশন জনিত পাওনাদী আদায়ের জন্য অত্র আদালতে মামলা দায়ের করিয়াছেন।

পরবর্তীতে বাদীর টার্মিনেশন জনিত পাওনা ৯,৩৬,১৪০/- টাকা। উক্ত পাওনা টাকা আসামীপক্ষ পরিশোধ না করায় বাদী অত্র আদালতে বিএলএ (মজুরী) মামলা নং-১২৬৩/২০১৯ দায়ের করেন। উক্ত মজুরী মামলায় আদালত হইতে আসামীগণের ঠিকানায় যথারীতি নোটিশ জারী হওয়া সত্বেও আসামীগণ এ্যাপিয়ার হন নাই, বর্ণিত মজুরী মামলার শুনানীর দিন ০২-০৩-২০২০ ইং তারিখ ধার্য ছিল। প্রতিপক্ষ/আসামী উপস্থিত না হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত শুনানী অন্তে একতরফা রায় প্রদান করেন। উক্ত রায়ে বিজ্ঞ আদালত ৯,৩৬,১৪০/- টাকা টার্মিনেশন জনিত বেনিফিট বাদীকে প্রদানের জন্য আসামী/প্রতিপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। বাদীপক্ষের উক্ত পাওনাদী আসামী পক্ষ প্রদান না করায় অত্র আদালতে ফৌজদারী মামলা দায়ের করায় আসামীপক্ষ আদালতে হাজির না হইয়া আইনজীবীর মাধ্যমে অত্র আদালতে মিস মামলা নং-২৫/২০ দায়ের করেন, উক্ত মামলাটি তিন হাজার টাকা খরচায় মঞ্জুর হয়। বাদীর দায়ের করা ফৌজঃ ২২২/২০ মামলাটি নথিজাত হয়। মজুরী মামলা পুনরুজ্জীবিত হয় এবং পূনঃশুনানীর তারিখ আদালত ধার্য করেন। আসামীপক্ষ মজুরী মামলা নং-১২৬৩/১৯ এর একাধিক ধার্য তারিখে আদালতে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নাই। এমতাবস্থায় মজুরী ১২৬৩/১৯ মামলায় ২৭-০৩-২০২২ ইং তারিখে আদালত একতরফা রায় প্রদান করেন। প্রদত্ত রায়ে ৫,৭৭,৩৮০/- টাকা বাদীকে প্রদানের জন্য আসামীদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন। বাদী বর্ণিত রায়ের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্ত হইয়া ১৭-০৪-২০২২ ইং তারিখে আসামীগণের স্থায়ী ঠিকানায় রেজিষ্ট্রী ডাকযোগে পৃথক পৃথক পত্র প্রেরন করেন এবং ২৭-০৩-২০২২ ইং তারিখের রায় মোতাবেক ৫.৭৭,৩৮০/- টাকা পাওনা টাকা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু আসামীগণ উক্ত পত্র পাওয়ার পরও রায় মোতাবেক বাদীকে টার্মিনেশন বেনিফিট প্রদান করেন নাই।

এ বিষয়ে ইত্তেফাকের অফিসে ফোন করে তাদের মতামত বা মন্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায় নাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *