হাতিয়া বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ৫ জনকে কারাগারে প্রেরণ

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লুৎফুল হায়দার চৌধুরী, ১৮ জানুয়ারি, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামে অনৈতিক কাজের অপবাদে এক পল্লী চিকিৎসককে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গেফ্রতারকৃতরা হলেন, উপজেলার মোল্লাগ্রামের আবদুল হোসেন মেকারের ছেলে জিয়া বাহিনী ওরফে জিহাদ (৩০), আদর্শ গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে ফারুক হোসেন (৩০), একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে আবু তাহের (২৭), আবুল কালামের ছেলে নবীর উদ্দিন (৩২) ও মিয়াজী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে আলমগীর হোসেন (৪০)। আটককৃতদের, সোমবার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় জনতা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের বাড়ির পাশ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন এক গৃহবধূ। এসময় ফারুক ও তার সহযোগিরা ওই গৃহবধূর দিকে টর্চলাইট দিলে তিনি দৌঁড়ে ওই চিকিৎসকের মুরগির খামারের সামনের একটি কক্ষে ঢুকে যান। তখন চিকিৎসক ওই কক্ষের ভেতরে ছিলেন।

এমতাবস্তায় ফারুক তার লোকজন নিয়ে কক্ষটির বাহিরে তালা লাগিয়ে চিৎকার করে আরও লোকজন জড়ো করে। কক্ষের ভেতরে থাকা ওই চিকিৎসক জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ফারুক, তার লোকজন ও স্থানীয়রা নারীসহ তাকে বাহিরে এনে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে মারধর করে একটি সুপারি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে মোর্শেদ বাজার তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার জানান, এলাকার কিছু উশৃঙ্খল বখাটে যুবক অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে পল্লী চিকিৎসক ও এক গৃহবধূকে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পুরুষকে নির্যাতনের ঘটনাটি তারা মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। পরে ঘটনায় নির্যাতনের শিকার পল্লী চিকিৎসক বাদী ১১ জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় একটি মামলা করলে রাতেই অভিযান চালিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ তাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ এনে গত ৫ জানুয়ারি জিহাদ, ফারুক, এনায়েত, ভুট্ট মাঝি ও ফারুক হোসেনকে আসামি করে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ একটি মামলা করেন।

অপরদিকে, রোববার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন সহ হাতিয়া থানায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে। এ সময় পুলিশ সুপার জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি একজন পুরুষের। তবে, এর সাথে একজন নারীর চিৎকারের আওয়ার শোনা যায়। পুরো ঘটনাটি পুলিশ খতিয়ে দেখছেন। এ বিষয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *