রাজারহাটে দায়সারা কাজ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিল উত্তোলন

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দায়সারা কাজ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের ২কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯-২০২০-অর্থবছরে বিদ্যালয়গুলোয় বড় মেরামত, স্লিপ, রুটিন, পার্ক, ওয়াস ব্লক ও প্রাক প্রাথমিক প্রকল্পে ওই টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। উপজেলার ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে এ অনিয়ম করা হয়েছে।

করোনায় বিদ্যালয় গুলো বন্ধ থাকায় প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিরা যথা সময়ে কাজ শুরু করেননি। শেষ পর্যায়ে বড় মেরামত প্রকল্পে উন্নয়ন কাজ শুরু হলেও অন্যান্য প্রকল্পের দায়সারা কাজ করেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জানান, বড় মেরামত প্রকল্পের কাজে বিল উত্তোলনের ক্ষেত্রে উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজন হয়। তাই এই প্রকল্পের কিছু কাজ হলেও, সেসব প্রকল্পে প্রত্যয়নের প্রয়োজন নেই সেখানে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার রাজমোহন, চন্দ্রপাড়া, তালতলা, রাঘব, হরিশ্বর তালুক, মানাবাড়ি, বাছড়া, মনিডাকুয়া, ফকিরের হাট, রাজমাল্লীর হাট, ফরকের হাট, শিমুলতলা, পোদ্দাপাড়া, ছোট মহিষমুড়ি, পাইকপাড়া, ছিনাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একাধিক প্রকল্পে সরকারি অর্থ বরাদ্দ থাকলেও মানসম্মত কাজ হয়নি।
রাজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক জানান, ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও উন্নয়ন কাজে ১লাখ টাকাও ব্যয় করা হয়নি।
রাজমাল্লীর হাট প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে বিদ্যালয়ে একটি নিম্নমানের পার্ক ও বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ টাইলস করে অন্যান্য খাতের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
রাজমোহন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার বলেন, বরাদ্দ কত, তা আমার জানা নেই। জনস্বাস্থ্য বিভাগ এসব কাজ দেখছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব কাজের সঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিভাগের কোনো সম্পর্ক নেই।
রাজমাল্লীর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, আমরা ঠিকমতো কাজ না করলে উপজেলা প্রকৌশলী প্রত্যয়নপত্র দিতেন না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছোলায়মান মিয়া বলেন, এটিওরা স্কুল দেখার পর বিল করেছে। এ ছাড়া বড় মেরামতের কাজে উপজেলা প্রকৌশলীর প্রত্যয়নপত্র ছাড়া বিল প্রদান করা হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী আবু তাহের মোঃ শফি জানান, বড় মেরামতের কাজগুলো সরেজমিন দেখে ও বুঝে নিয়ে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করছি। যারা কাজ ভালো করেনি তাদের এখনও প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *