নীলফামারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু

নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ০২ মার্চ, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নীলফামারীর কচুকাটা ইউনিয়নের তালুক মানুষমারা গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বের হয়ে বন্ধুর সাথে বেড়াতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় রুবাইয়া ইয়াসমিন রিমু নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। তবে রিমুর পরিবারের দাবী পুর্ব পরিকল্পিতভাবে রিমুকে অপহারনের পর হত্যা করেছে বন্ধু ফয়জুল করিম ফয়সাল। এ ব্যাপারে জলঢাকা থানায় অপহরন ও হত্যার অভিযোগে ফয়সল ও তার বন্ধু রিজভির নামে মামলা দায়ের করা হয়। তবে পুলিশ বলেছে তদন্ত শেষে ঘটনার রহস্য উম্মোচন করা হবে।
নিহত রুবাইয়া ইয়াসমিন রিমু রংপুর কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী ও কচুকাটা ইউনিয়নের তালুক মানুষমারা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। তার বন্ধু ফায়জুল করিম ফয়সাল একই গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল সোমবার নীলফামারী-জলঢাকা সড়কের রাজারহাট নামক স্থানে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আহত হয় রিমু আর ফয়সাল। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভর্তি করায়। রিমুর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রিমুর বাবার দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রভাষক রশিদুল ইসলামের বাড়ী থেকে প্রাইভেট শেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেংগনমারী বাজারের রজনীগন্ধা হোটেলের একশ’গজ পশ্চিমে অভিযুক্ত ফয়সাল ও তার বন্ধুরা রিমুকে জোরপুর্বক মোটর সাইকেলে তুলে জলঢাকা অভিমুখে রওনা দেয়। রাজারহাটে যাওয়ার পুর্বেই ফয়সাল ইচ্ছাপুর্বক নিজ মটরসাইকেল ইটভর্তি ট্রলির সাথে ধাক্কা লাগিয়ে রিমুকে গুরতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। রিমুকে গুরুধর আহত অবস্থায় স্থায়ীরা উদ্ধার করে জলঢাকা উপজেলা হাসাপতালে নিয়া যায়। সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রিমু মারা যায়।
রিমুর মা লিলি বেগম অভিযোগ করে জানান, আমার মেয়েকে জোড় পুর্বক অপহরন করা হয়েছে। অপহরনের পর তাকে ইচ্ছাপুর্বক মোটর সাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।
রিমুর মামাতো ভাই রংপুরের একটি বেসরকারি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ওয়াকিব ইসলাম জানান, আমি রংপুরে থাকার সুবাদে মুঠো ফোনে জানতে পেরে মেডিকেল কলেজে গেলে রিমুকে লিফটে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আমার সামনে দিয়ে ফয়সাল ও রিজভী পালিয়ে যায়।
কিন্তু রিমুর বান্ধবী নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী নুরী আক্তার জানান, আমরা টেংগনমারী বাজারে রশিদুল স্যারের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়ি। গতকাল সোমবার আমি, রিমুসহ চার জন একসাথে প্রাইভেট পড়তে যাই। টেংগনমারী বাজারে যাওয়ার সময়ে হটাৎ রিমুর ফোনে কল আসলে সে প্রাইভেট পড়বে না জানিয়ে চলে যায় এবং বলে প্রাইভেট শেষ হলে তাকে ফোন দিতে। প্রাইভেট শেষ করে তাকে কল ও ম্যাসেজ পাঠালে তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
নীলফামারী সদরের কচুকাটা ইউনিযন পরিষদ চেযারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরী বলেন, ২৪ঘন্টা অতিবাহিত হলেও আমাকে কোন পক্ষ থেকে আমায় অবহিত করেন নাই। ফয়সলের সঙ্গে নিহত রিমুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে লোকমুখে জানতে পেরেছি।’
জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নিহত রিমুকে অপহরনের পর হত্যা করা হয়েছে মর্মে রিমুর বাবা থানায় মামলা করেছে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *