কালীগঞ্জে সড়ক সংস্কার শুরু হওয়ার আগেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, জাহিদুর রহমান তারিক, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সড়ক সংস্কারে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ তিন মাস মেয়াদি প্রকল্প উদ্বোধনও করেছেন। কিন্তু আট মাস পরও কাজ শুরু হয়নি। এ অবস্থা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ছোটঘিঘাটি-ত্রিলোচনপুর (ভায়া গোবরডাঙ্গা) সড়কটির। সড়ক সংস্কার না হওয়ায় এলাকার লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুম পার হলেও সড়কের অনেক স্থানে কাদা শুকায়নি। যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। এ রাস্তা দিয়ে গরুর গাড়িতে ফসল ঘরে আনতে কৃষকেরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার ছোটঘিঘাটি বাজার থেকে একটি সড়ক ত্রিলোচনপুর বাজারের দিকে চলে গেছে। আরেকটি সড়ক গোবরডাঙ্গা গ্রাম হয়ে ওই একই বাজারে মিশেছে। এখানকার প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে আগে ইট বিছানো হয়েছিল। এখন সেটা ভেঙেচুরে কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কের দুই কিলোমিটারে ইট বিছানোর জন্য ২০১৬ সালের এপ্রিলে দরপত্র আহব্বান করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে কার্যাদেশ পায় “মেসার্স মুগ্ধ বিল্ডার্স” নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু ঠিকাদার সঠিক সময়ে কাজ শুরু করেননি।

কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার বলেন, ঠিকাদার কাজটি শুরু করতে বিলম্ব করেন। এক পর্যায়ে ২০ মার্চ কাজটি শুরু করেন। স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম মহোদয় এই কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের পর আর কাজ করা হয়নি। সেই থেকে পড়ে আছে রাস্তাটি। এ বিষয়ে ঠিকাদারকে একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। নতুন দরপত্র আহব্বানের জন্য ২২ মে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাঁরা সেই চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় আছেন। সড়ক সংস্কার না হওয়ায় পুরো বর্ষাকাল এলাকাবাসীকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সেই ভোগান্তি এখনো অব্যাহত আছে। ১৩ নভেম্বর কথা হয় ছোটঘিঘাটি গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অনেক আশা করেছিলাম রাস্তাটি পাকা হবে। বর্ষা মৌসুমে ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারব। কিন্তু গোটা বর্ষা মৌসুম হাঁটুসমান কাদা পেরিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। উদ্বোধনের পরও রাস্তার কাজ হয়নি। একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম গরুর গাড়ির ওপর বসেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেকে আসেন। মাপামাপি করেন। কিন্তু রাস্তা আর পাকা হয় না। গোবরডাঙ্গা গ্রামের আমিরুল ইসলাম বাইসাইকেল ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, তাঁদের গ্রামে যানবাহনে করে কেউ যেতে পারেন না। উদ্বোধনের পরও কেন রাস্তা সংস্কার হচ্ছে না? তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এ ব্যাপারে ঠিকাদার আবু সাঈদ গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য গত সপ্তাহ থেকে ইট-বালু নেওয়া শুরু হয়েছে। শিগগিরই ইট বিছানোর কাজ শুরু হবে। উপজেলা প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, চলতি সপ্তাহে ঝিনাইদহ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন ঠিকাদার দ্রুত কাজ শুরু করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *