গাইবান্ধা করোনায় ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন  ডাঃ মোঃ নুরুন্নবী মিয়া

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, একরামুল হক, ১৮ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : করোনা দুর্যোগের মধ্যে ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃমোঃ নুরুন্নবী মিয়া । করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেে এই চিকিৎসক।
গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায়  প্রাথমিক সেবা ছাড়া জটিল কোন রোগের সমস্যায় পড়লে বাহিরে কোন চেম্বারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সাধারণ রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কথায় আছে- “নাই মামার চাইতে কানা মামা ভালো”।
সাদুল্লাপুর  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পশ্চিম পাশ্বে সাদুল্লাপুর শতবর্ষিয়ান স্কুল মার্কেটে নিজস্ব চেম্বারে মানুষ যখন করোনা আতঙ্কে ঠিক সেই সময় থেকে সাদুল্লাপুরে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মানবসেবী এই চিকিৎসক। সবার সুপরিচিত একমাত্র ভরসা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মাহবুবুল আলম বসতেন কমফোর্ট ল্যাবে করোনার কারনে তিনিও বসছেন না। বাকি যারা ডাক্তার বিভিন্ন নিজস্ব চেম্বারে (উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও পল্লী চিকিৎসক) বসেন তাড়া ভিজিট নেন ১৫০-৩০০ টাকা।
বড় কোন সমস্যা হলে ছুঁটে যেতে হয় রংপরে। তাছাড়া সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই কোন বিশেষজ্ঞ। এই উপজেলা হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, বিশেষজ্ঞ এসব চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এতে করে আর্থিকভাবে লোকসান ও নানান সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের।
যেসব ডাক্তার আসেন সবেই ইনর্টানি করার জন্য পরে কিছু দিন থেকে চলে যান বড় শহরের হাসপাতালে। এসব ডাক্তার নতুন হওয়ায় অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া ভালো কোন চিকিৎসা পাওয়া যায় না সাদুল্লাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সাদুল্লাপুর উপজেলার গ্রামে বেশি ভাগ অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবা চলে হাতুয়া ডাক্তার (পল্লী চিকিৎসক) দ্বারা।
আর সচেতন মানুষের ডাক্তার বর্তমানে একমাত্র ভরসা সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ নুরুন্নবীর উপর। উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হলেও  তার চিকিৎসায় বর্তমানে অনেক ভালো আল্লাহর রহমতে ডাক্তার হিসাবে অনেক সুনাম অর্জন করেছেন।
সাদুল্লাপুরে কোন শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় বর্তমানে শিশু চিকিৎসায় ভালো সুনাম অর্জন করে যাচ্ছেন। তার চিকিৎসা সেবায় মানুষের ভালোবাসায় করোনা দুর্যোগের মধ্যে ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃমোঃ নুরুন্নবী মিয়া। জীবন ঝুঁকির মধ্যেও দুঃসময়ে রোগীদের সেবা দিতে পেরে আত্মতৃপ্ত ডাঃমোঃ নুরুন্নবী মিয়ার। এই চরম দুঃসময়ে অসহায় মানুষদের সেবা দেয়াই তার কাজ । রোগীরা এই সেবা পেয়ে মুগ্ধ।
বড়দাউদপুরের রোগী আসমা বেওয়া বলেন, আগে এই ডাক্তার ট্যাকা নিচলো এখন এই করোনার  মধ্যে ২ বার আসনো একবারও ট্যাকা ন্যায় নাই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজেকে অনেকটা আড়ালে রেখেই রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এই মানবসেবী এই চিকিৎসক। ডাক্তার নুরুন্নবী বলেন, করোনা ভাইরাসে মানুষ যখন আতঙ্গে সাদুল্লাপুর বাসী, তখন থেকে মানুষের  ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
দিনে অন্তত ৩০-৪০ জন রোগী দেখি, তাদের  এই সেবা দিতে পেরে  আমি আত্মতৃপ্তি পাই। ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে নিজের কাছে ভালো লাগে এই দুর্যোগ সময়ে মানুষের পাশে থাকতে পেরে। আল্লাহ যেন আমাকে এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকতে দেয়। সাধারণ অসহায় রোগীদের যে আত্বনার্থ সাদুল্লাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগী দেখে ক্লান্ত হলেও  অক্লান্তরভাবকে না ভেবে প্রতিদিনই রোগী দেখচ্ছি।
ফ্রি প্রেসক্রিপশন ছাড়াও অসহায় হতদরিদ্র রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি জরুরী রোগীর টেষ্টের প্রয়োজন হলে ৫০% ছাড় দিয়ে পাঠাচ্ছি পরীক্ষা কেন্দ্র। আপনি সোস্যাল মিডিয়ায় কিংবা পত্রিকায় এতোদিন দেননি কেন? এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিনিধিকে বলেন, করোনার দূর্যোগে মানুষ বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছেন পেপার পত্রিকায় কিংবা সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন আমি কিন্তু কাউকে বলিনি আমার এই মানবসেবার কথা।
আমি কতটুকু সেবা দিচ্ছি আমার এই সেবা মহান সৃষ্টিকর্তা দেখছেন। জয়েনপুরের বাসিন্দা মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, ডাক্তার হয়ে ডাঃ নুরুন্নবী  চিকিৎসকদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। অন্য চিকিৎসকরাও এমন উদ্যোগ নিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *