করোনা অবনতি; সাধারণ ছুটি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ৩১ মার্চ, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধকল্পে সরকার সারাদেশব্যাপী চলমান সাধারণ ছুটি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত আরো পাঁচদিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমরা এর আগে ২৬ মার্চ থেকে ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছিলাম (৪ এপ্রিল পর্যন্ত) এবং এই ছুটি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত আরো পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের মাঠ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানোর ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শেখ হাসিনা বলেন, এই ছুটি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। কিন্তু এতে সবকিছু পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া যাবে না।সীমিত পর্যায়ে তা করা যেতে পারে এবং কিছু লোকের চলাচলের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। গণপরিবহনের চলাচল সীমিত করতে হবে। সরকার ১৪ দিনের ছুটি শেষ হওয়ার পর পরিস্থিতি পর্যলোচনা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সবকিছু বন্ধ করে দেয়া যাবে না। অত্যাবশ্যকীয় বিষয়গুলো চালু রাখতে হবে। তবে, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন স্কুল-কলেজ আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে, প্রধানমন্ত্রী সবধরণের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিল্প-কলকারখানা চালু রাখার ব্যাপারে অভিমত ব্যক্ত করেন। অত্যাবশ্যকীয় অনেক জিনিস উৎপাদনের জন্য আমাদেরকে শিল্প-কারখানা চালু রাখতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) ছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন। ছুটি বাড়ানো হতে পারে, কেননা করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে ছুটি ঘোষণার পর পরই অনেকেই তাঁদের গ্রামের বাড়িতে চলে গেছের। কাজেই এই প্রাণঘাতি ভাইরাসের কোন সংক্রমন যেন না ঘটে সেজন্য তাঁদের কোয়ারেন্টাইন সময়টা গণনা করে ১৪ দিন করার জন্য ছুটি ৯ তারিখ পর্যন্ত বাড়াতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতার ভিত্তিতে কিছু সেক্টরে ছাড় দিতে হবে। সেটা বাড়ানোর সাথে সাথে আমাদের সীমিত আকারে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করার জন্য আমরা চিন্তা-ভাবনা করে বলব, কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা ছাড় দেব।যোগাযোগের (পরিবহন) ক্ষেত্রে শ্রমিক শেণি যারা আছেন তারাও যাতে কষ্ট না পায়, সেজন্য তাদের তালিকা আমি ইতোমধ্যে করতে বলেছি। তাদের যেভাবে সাহায্য করার দরকার, আমরা সেই সাহায্য পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করব। আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থা এভাবে থাকবে যেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে, মানুষের আওতার মধ্যে থাকে। সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। কারণ মানুষের দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে অযথা দাম বাড়িয়ে মুনাফা নেয়া আসলে অমানবিক হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখবেন। জনসমাগম এড়াতে আসন্ন পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাতিল করার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে জনসমাগম আরো বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আমাদের বাংলা নববর্ষের উৎসবে এ বছর যাতে জনসমাগম হয়, তেমন কিছু করা উচিত হবে না। অবশ্য ডিজিটাল ব্যবস্থায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে। তবে, জনসমাগম করে অনুষ্ঠান আয়োজন সারা বাংলাদেশে বন্ধ রাখতে হবে। এর আগে গত ২৩ মার্চ করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে সরকার সারাদেশে জরুরী সেবা ছাড়া সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারন ছুটি ঘোষণা করে। ছুটির সময় কোন বিশেষ প্রয়োজন যেমন জরুরী খাদ্য, মেডিকেল সামগ্রী, ওষুধের প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে ঘরে থাকতে বলা হয়। করোনা মোকাবিলায় দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করাটা জরুরি। আমাদের দেশটা ছোট কিন্তু জনসংখ্যা ব্যাপক। এরপরও আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি। সেজন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে রয়েছে।
সবাইকে ঘরে অবস্থানের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা প্রতিরোধে মানুষের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আপনারা এসব নির্দেশনা মেনে চলুন। কেননা নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। বিশ্বব্যাপী করোনার থাবা রয়ে গেছে। আমরা বিশ্ব থেকে দূরে নই। আমাদের আরও সচেতন থাকা দরকার। আমরা আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য অনেক আগে থেকেই কাজ করেছি। ভবিষ্যতে যাতে করোনাভাইরাস না ছড়ায় সেজন্য সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। এখানে কোনো লুকোচুরি করার সুযোগ নেই। লুকোচুরি করলে নিজের জীবনকেই ঝুঁকিতে ফেলে দেয়া হবে। জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। সাহায্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কোনো রকম দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নিলে, কোনো অভিযোগ পেলে আমি কিন্তু তাকে ছাড়ব না। বিন্দু পরিমাণ অনিয়ম সহ্য করা হবে না। ছুটি ঘোষণার কারণে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের সমস্যা হচ্ছে। কৃষক, চা শ্রমিক, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা দৈনন্দিন কাজে যেতে পারছে না। তাদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। সেখানে ১০ টাকা কেজি চালসহ নানা সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের কাছে সাহায্য ও খাদ্যদ্রব্য পাঠাতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাইকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা করতে হবে। সেই অনুযায়ী সবাই যেন সাহায্য পায়। কেউ যেন বাদ না পড়ে। পিপিই ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য। যাদের প্রয়োজন নাই তাদের পিপিই ব্যবহারের প্রয়োজন নাই। পিপিই সকলের ব্যবহারের জন্য নয়। এটি ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য। সকলে পিপিই ব্যবহার করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা যেন ব্যাহত না হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্যও প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে উদ্দেশ্য করে সকল জনপ্রতিনিধিদেরকে নিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করেন- করোনার সঙ্গে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া যুক্ত হলে পরিস্থিতি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
তিনি বলেন, আর কয়েকদিনের মধ্যেই মশার প্রাদুর্ভাবে ডেঙ্গু দেখা দিতে পারে, কাজেই সেটা যেন না হয় সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি জনগণকে নিজ বাড়ি এবং তার চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পানি জমে থাকা রোধ করে মশার বংশ বিস্তার রোধ করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য সকলকে মশারি খাটিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন। আমরা চাই না, বাইরের কেউ আর ওখানে ঢুকুক। যেহেতু একটা কেস (করোনায় আক্রান্ত রোগী) পাওয়া গেছে। আর যেন সংক্রমিত না হয়, এজন্য সেখানে পর্যটকও যেতে পারবে না। সবই বন্ধ রাখতে হবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে শুরু করে সবকিছু যেন ভালোভাবে সংরক্ষিত হয়, সেটা দেখতে হবে।রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়েই আমরা চিন্তিত। কারণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যদি কোনো কিছু হয়ে যায়, তাহলে খুবই ক্ষতি হবে। এ জন্য বাইরের কোনো লোকের দরকার নেই।
তিনি বলেন, আমাদের যারা আছে, তারাই সার্ভিস দেবে। ওখানে তো আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সশস্ত্রবাহিনী, সেনাবাহিনী সকলেই তো আছে। তারা তো কাজ করছে। আমরা নিজেদের লোক দিয়েই সব করাব। বাইরের লোক যেন এই সময়ের মধ্যে বেশি কেউ না যায়, সেটা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও গুজব ছড়ালে সঙ্গে সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। আমাদের সবচেয়ে যেটা সমস্যা সৃষ্টি করে সেটা হচ্ছে, নানা ধরনের গুজব। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি বলে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি, সেই সুযোগটা পাচ্ছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরও কথা বলব। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অ্যাপসে নানা ধরনের গুজব অনবরত ছড়ানো হয়ে থাকে। নানা ধরনের কথা অনেকে বলে থাকেন। দেশে নয় দেশের বাইরে থেকেও কেউ কেউ বলেন। যারা এগুলো বলবেন, যদি কেউ মিথ্যা অপপ্রচার করেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা সঙ্গে সঙ্গে নিতে হবে। গুজবে কেউ কান দেবেন না।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে অল্প একটু জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সেজন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। কারও এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। ঘরের কোণায় হলেও একটা কিছু ফসাল ফলান। তরি-তরকারি চাষ করেন, হাঁস-মুরগির খামার বা মাছের চাষ করেন, বা ছাগল, গরু, ভেড়া- যাই হোক, যে যা পারেন পাল করেন, যোগ করেন তিনি। এরপরে কিন্তু আরেকটা ধাক্কা আসবে। সারাবিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে। সে কারণে বিরাট একটা অর্থনৈতিক মন্দা আসতে পারে। সেই মন্দা মোকাবেলায় চিন্তাভাবনা এখন থেকে আমাদের করতে হবে, পরিকল্পনা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো খাদ্য নিরাপত্তা। এক্ষেত্রে আমাদের একটা সুবিধা হল আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে, যোগ করেন তিনি।
এ সময় কৃষিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন যেন অব্যাহত থাকে। এ বিষয়ে সকলকে নজর রাখতে হবে। খাদ্য উৎপাদনের জন্য যা যা উপকরণ দরকার, তা যেন মানুষের কাছে পৌঁছে, এ বিষয়ে আমাদের কৃষির সাথে যারা সম্পৃক্ত আছেন তারা উদ্যোগ নেবেন। আমরা যদি খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে আমাদের দেশের চাহিদা মেটাতে পারব। পাশাপাশি অন্য দেশের প্রয়োজন হলে আমরা সাহায্য করতে পারব। আল্লাহর রহমতে সেইসব ক্ষমতা আমাদের আছে। করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা সচেতন হয়েছি বলেই তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও আমাদের অবস্থা খুব খারাপ নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সব নির্দেশনা আমরা অনুসরণ করছি। চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর বড় কর্তব্য মনে করেছি, জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া। সেটিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানসহ সব অনুষ্ঠানে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়। যেন সবাই নিরাপদে থাকেন। চীনের উহান থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা হলো, তাদের কোয়ারেনটাইনে রাখা হলো। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হলো, পরে অনেকেই চলে এলো। তাদের মধ্যে অনেকে সংক্রমিত। তাদের আলাদা রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলো। তখন মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সরকারি ছুটি ঘোষণা করলাম। সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, তাদের জীবন যেন স্তব্ধ না হয়, সে জন্য ব্যাংক কিছু সময় খোলা রাখা, কাঁচাবাজার চালু, পণ্য পরিবহন, জরুরি সেবা সবকিছুই সাধারণ মানুষের জন্য সীমিত আকারে চালু রেখেছি’, যোগ করে তিনি বলেন, ‘আইইডিসিআর কাজ করছে। শুধু রাজধানী নয়, বিভাগীয় পর্যায়েও করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছি।
জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবন থেমে থাকবে না, চলবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। তারপরও জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। সেটা করতে গিয়ে মানুষকে কষ্টও দেওয়া যাবে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাঠ প্রশাসন কীভাবে কাজ করছে এবং তারা কী কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন- তা সরাসরি জানতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা তরুন জার্মান প্রবাসী ফয়সল শেখ ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে মত বিনিময় করেন। টেস্টে পজিটিভ আসার পর আইইডিসিআর আমাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখে। তারা বাসায় এসে আমাকে নিয়ে গিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি রাখে। সেখানে আমি ১০ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকি, আমার পরিবারের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।ফয়সল বলেন, ‘কয়েকদিন পর বারবার টেস্ট করার পর যখন আমার টেস্ট রেজাল্ট নেগেটিভ আসে, তখন আমি আমার পরিবারের কাছে ফিরে যাই। আল্লাহর রহমতে আমার মাধ্যমে পরিবারের কারও করোনা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার নির্দেশনায় দেশে যে করোনা চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, সেজন্য আমি আপনার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। দেশের জনগণের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানুন। করোনার সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে বাসায় থাকা, ঘরে থাকা। পরিবারকে সময় দিন। যতদিন ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে ঘরে থাকুন, তাহলেই কেবল আমরা করোনা থেকে মুক্ত থাকতে পারব।