মনোহরদীতে ইউটিউবে ড্রাগন ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ড্রাগন চাষ
নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি, কে.এইচ.নজরুল ইসলাম, ২৬ জানুয়ারি, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : বহুমুখী পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ বিদেশি এক ফলের নাম ড্রাগন। দহ্মিণ আমেরিকার গভীর অরণ্যের এই ফলের জন্ম হলেও বর্তমানে থাইল্যান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভি
ইউটিউবে ড্রাগন চাষে বিভিন্ন এলাকার চাষীদের সফলতার ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ড্রাগন চাষ করেছেন জেলার মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দীর মুখলেছুর রহমান। আর এই ড্রাগন চাষেই নিজে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নও দেখছেন। এবং ড্রাগন চাষের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃষি হ্মেত্রে অনন্য অবদান রাখার স্বপ্ন ও দেখছেন এই মুখলেছুর রহমান।
উপজেলার শুকুন্দী ইউনিয়নের দিঘাকান্দী গ্রামের বীর মুৃক্তিযুদ্ধা তমিজ উদ্দিন মাস্টারের এক মাত্র পুত্র মুখলেছুর রহমান ২০০১ সালে মনোহরদী সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করেন। এইচ এস সি পাশ করার কিছু দিন পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী নেন মুখলেছুর রহমান। বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে হার ভাঙ্গা পরিশ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিক কম থাকায় সেখানে বেশি দিন চাকরি করেন নাই। চাকরি ছেড়ে চলে আসেন নিজ গ্রামের বাড়িতে।
মাঝে মাঝে ইউটিউব থেকে লাভজনক ফল ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখে ড্রাগন চাষের প্রতি মোখলেছুর রহমানের আগ্রহ বাড়ে এবং ইউটিউব থেকেই ড্রাগন চাষের ব্যাপারে তথ্য নিতে থাকে। নিজেকে স্বাবলম্বী করার জন্য ২ বিঘা জমিতে নিজ উদ্যোগে ড্রাগন চাষ শুরু করেন গ্রামের বাড়ি দিঘাকান্দীতে।
ড্রাগন চাষী মুখলেছুর রহমান বলেন, চাকুরি ছেড়ে দিয়ে এসে প্রথমে প্রতিবেশি এক কৃষকের কাছ থেকে দুই বিঘা জমি এক বছরে ২০ হাজার টাকায় লিজ নেই ১০ বছরের জন্য। এরপর পাশ্যবর্তী উপজেলার আরেক সফল ড্রাগন চাষি সাবেক শিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মৃধার পরামর্শক্রমে সে জমি প্রস্তুত করি।
জমিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব বজায় রেখে মোট ৩ শত ৫০ টি সিমেন্টের খু্ঁটি স্থাপন করে প্রত্যেক খুঁটির মাথায় একটি করে পরিত্যাক্ত ইজিবাইকের ট্রায়ার বেধেঁ দেই। এর পর প্রতিটি খুঁটির সাইডে গর্ত করে কম্পোষ্ট সার প্রয়োগ করা হয়। এরপর নাটোর থেকে আানা হয় মোট বারো হাজার টাকার ড্রাগন ছোট চারা গাছ। ২ বিঘা জমিতে মোট সাড়ে ৩ শত সিমেন্টের খুঁটির প্রতেকটি খুঁটির চারা পার্শ্বে চারটি চারা করে মোট ১৪ শত ড্রাগনের চারা রোপন করা হয়।
ইতি মধ্যে বাগানের বয়স প্রায় ৬ মাস হয়েছে। আমার বাগানে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১০ লহ্ম টাকার উপরে। প্রতিদিন আমার বাগানে ৩ থেকে ৪ জন শ্রমিক কাজ করে। ড্রাগন চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ইতি মধ্যে ড্রাগনের চারাগুলো বেশ পরিপক্ক ও হয়ে উঠেছে। এর জন্যই বেশ পরিশ্রম করতে হচ্ছে আমার।
মুখলেছুর আরোও বলেন, ড্রাগন চারা রোপনের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গাছে ফুল আসে। ফুল আসার পর ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে ফল হয়। ইংরেজি এপ্রিল থেকে মে মাসে ফুল আসার সময় হলেও অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসেও ফুল ধরে এবং এ সময় ফল উঠানো যায়। বারো -আঠারো মাস বয়সি গাছ থেকে ৫২০ টি ফল উঠানো যায়।
তবে প্রাপ্ত বয়স্ক একটি গাছ থেকে ১০০ শত টি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি ড্রাগন গাছ মোট ২০ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত। এই পর্যন্ত সরাকারি ভাবে আমাকে কোন আর্থিক সহায়তা করা হয়নি। সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা হলে আমি আরোও একটি বাগান করবো।
আমার ড্রাগন বাগান দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন লোকজন এসে বিড় করে এতে আমার আনন্দ লাগে।মনোহরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আয়েশা আক্তার বলেন, এই এলাকার মাটি এবং আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য বেশি উপযোগী। সর্বদা বাগানটি পরিদর্শন করে চাষিকে উপযুক্ত পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছি।