৯৯৯-এ কল দিয়ে যুবকের লাশ উদ্ধারের ১১ দিনের মধ্যে স্ত্রীসহ গ্রেফতার ৩

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, মোঃ আবদুল মান্নান, ০৭ জানুয়ারি ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কলের সুত্র ধরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের আলকরা-কেন্দুয়া রাস্তা মাথায় রেললাইনের পাশ থেকে ২৫ বছর বয়সী এক অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার জানান, লাশ উদ্ধারের পরে লাশটি ময়নাতদন্ত করা হয়। উদ্ধারকৃত লাশের গলায় কালো দাঘের চিহ্ন পাওয়া যায়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় একই থানার এসআই মনির হোসেন।

এসআই মনির হোসেন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা নিহত যুবকের পরিচয় উদ্ধার করি। তার নাম শায়েস্তা খান, পিতা-মৃত নুরুল ইসলাম, সাং-মেহেদীনগর, থানা-জোরারগঞ্জ, চট্টগ্রাম। পরবর্তীতে জানা যায়, নিহত যুবকের শ্বশুড় বাড়ি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের বাকগ্রামে। সে ওই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে সুমি আক্তারকে(২৪) বিয়ে করে। মৃত্যুর আগের দিন শায়েস্তা খান শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে আসে। কিন্তু তার স্ত্রী সুমি আক্তার গুনবতী ইউনিয়নের চাপাচৌ গ্রামের শহীদুল্লাহর বাড়িতে ভাড়া থাকতো। সুমি আক্তার বিভিন্ন ষ্টেজে নৃত্য শিল্পী হিসেবে পরিচিত।

এসআই মনির হোসেন আরও জানান, শায়েস্তা খানের মৃত্যুর আগের দিন স্ত্রী সুমির ভাড়া বাসায় উঠে। আশে-পাশের লোকজন ওই বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে সুমি আক্তার বাড়ির আশে-পাশের লোকজনকে ঢেকে বলে আমার স্বামী শায়েস্তা খান আত্মহত্যা করেছে। এ সময় লোকজন গিয়ে শায়েস্তা খানের ঝুলন্ত লাশ সুমির ঘরে দেখতে পায়। পরবর্তীতে বাড়ির মালিক শহিদুল্লাহ সুমিকে লাশ থানায় অথবা তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেই তিনি চলে যান।

কিন্তু সুমি আক্তার লাশটি থানায় বা তার বাবার বাড়িতে না নিয়ে গ্রেফতারকৃতদের সহযোগিতায় লাশটি রেললাইনের পাশে রেখে চলে যায়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শায়েস্তা খানের স্ত্রী সুমি আক্তার(২৪), চট্টগ্রামের হাবিবুর রহমান ফারুক(২২), চাপাচৌ গ্রামের সিএনজি চালক রুহুল আমিন(৬০) কে গ্রেফতার করে ৫ জানুয়ারি রোববার আদালতে প্রেরণ করি। এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত তিন আসামীর রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে আনার পরে শায়েস্তা খানের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হবে।

চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক তদন্ত শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, ‘শায়েস্তা খানের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চারজন স্বাক্ষী আদালতের তাদের স্বাক্ষী দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাথমিকভাবে তিনজনকে গ্রেফতার শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *