নীলফামারী চিকিৎসক সংকটে চরম ভোগান্তিতে রোগীরা
নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নীলফামারীর ছয় উপজেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক ও নার্স কম থাকায় জটিল ও কঠিন রোগীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে এ জেলার সাধারণ মানুষ। সঠিক চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বে-সরকারী ক্লিনিকে ছোটাছুটি করতে হয় প্রতিনিয়ত। নীলফামারী জেলার জেনারেল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট দুইশত ছাব্বিশ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে রয়েছে শুধু পচানব্বই জন। নার্স দুইশত আটশট্টি জনের পদ থাকলেও বর্তমান রয়েছে দুইশত বায়ান্ন জন। নীলফামারী সদরে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল, এই হাসপাতালে সাতান্ন জন
চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছে আঠার জন, নার্স একশত পঞ্চাশ জনের মধ্যে রয়েছে বিরানব্বই জন। সৈয়দপুর উপজেলার ১০০ শয্যা হাসপাতালে একচল্লিশ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে রয়েছে দশ জন চিকিৎসক, নার্স চুরানব্বইর মধ্যে ছাপান্ন জন রয়েছে। জলঢাকা উপজেলায় ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তেএিশ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে চিকিৎসক রয়েছে পনের জন, নার্স এিশ জনের মধ্যে রয়েছে সাতাইশ জন। কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তেএিশ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে রয়েছে চৌদ্দ জন চিকিৎসক, নার্স পঁচিশ জনের মধ্যে তেইশ জন রয়েছে।
ডোমার ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একএিশ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেখানে রয়েছে বিশ জন চিকিৎসক, নার্স তেএিশ জনের মধ্যে আটাশ জন রয়েছে। ডিমলা উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সেখানে একএিশ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও রয়েছে আঠার জন চিকিৎসক, নার্স এিশ জনের মধ্যে রয়েছে ছাব্বিশ জন। রোগীর পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় প্যাথলজি, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম সব জায়গায় চালু থাকার কথা থাকলেও কিশোরগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেকনিশিয়ান ও জনবল সংকটের কারনে আজ পর্যন্ত এক্স-রে মেশিনটি চালু হয়নি। ওই উপজেলার রোগিরা এক্স-রে করতে না পারায় সঠিক রোগ নির্ণয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
কিশোরগঞ্জ ও ডিমলা উপজেলায় চিকিৎসকের পদায়ন না থাকায় গাইনি অপারেশন সহ অন্যান্য অপারেশন চালু নেই। ওই দুই উপজেলার অপারেশন প্রয়োজনীয় রোগিদের নিয়ে বিপাকে পরতে হয় স্বজনদের। অপারেশনের জন্য রোগী নিয়ে ছুটোছুটি করতে হয় বিভিন্ন বে-সরকারী ক্লিনিকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছে মরজিনা বেগম। তিনি উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের আব্দুল কাদেরের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন অপারেশনের ব্যবস্থা না থাকায় একটি বেসরকারী ক্লিনিকে
চিকিৎসা নিতে হবে বলে জানান রোগীর স্বজনেরা। হাসপাতালগুলোয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় অনেকে জীবন বাঁচানোর জন্য ছুটে যান বেসরকারী ক্লিনিকে। এ জেলায় বে-সরকারী ক্লিনিক রয়েছে ৩৮টি, ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার রয়েছে ৬৮টি, মেডিকেল চেকাপ সেন্টার রয়েছে ১টি।
জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. জাহাগীর কবির বলেন প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক ও নার্স সংকট রয়েছে জেলার জেনারেল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা তার পরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।