হাতিয়ায় ৫ কিশোরকে চুরির অভিযোগে বেঁধে নির্যাতন, আটক-৪
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূংফুল হায়দার চৌধুরী, ১৭ মে, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে এক জেলের মাছ ধরার বিন্দি জাল চুরির অভিযোগে ৫ কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার কিশোররা হলো, উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার বাসিন্দা সহদেব (১৫),কিরণ (১৫),শিশুপদ, (১৬),সমূল্য (১৫), রতন (১৬)।
গতকাল রোববার সকাল পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার গ্রাম্য সালিশে কিশোর জেলেদেরকে রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানোর এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার কয়েক ঘন্টা মধ্যেই নির্যাতনের ১মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হলে জেলা পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে হাতিয়া থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক এ ঘটনায় ৪জনকে আটক করে।
আটককৃতরা হলো, শুল্লকিয়া গ্রামের জেলে পাড়ার মাতব্বর শ্রীহরি জলদাস, নেপাল চন্দ জলদাস, বিধান চন্দ জলদাস, রায় মেহেন জলদাস।
ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় জেলে পাড়ার নারী-পুরুষের সামনে ৫ কিশোরকে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। এই সময় ওই পাঁচ কিশোর এবং তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা আহাজারি করে তাদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। কান্নারত নারীরা এগিয়ে আসলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়।
চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল হাজ্ব মহিউদ্দিন আহাম্মেদ জানান, গত কয়েক দিন আগে ৫ কিশোর মিলে এক জেলের একটি বিন্দি জাল চুরি করে পাশ্ববর্তী সোনাদিয়া ইউনিয়নের এক জেলের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে ওই জাল উদ্ধার করে শনিবার (১৪ মে) বিকেলে মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে জেলে পাড়ার মাতব্বর শ্রীহরি দলদাস, নেপাল চন্দ জলদাস,প্রিয় লাল জলদাস বিধান চন্দ জলদাস, রায় মেহেন জলদাসের নেতৃত্বে একটি সালিশী বৈঠক বসে।
তিনি আরো জানান, ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে হাতিয়া থানার ওসি আমাকে অবহিত করে। আমি অভিযুক্ত জেলে পাড়ার মাতব্বরদের থানায় গিয়ে ওসির সাথে কথা বলতে বলেছি।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) আবুল খায়ের বলেন, জাল চুরির অভিযোগে ৫ কিশোর জেলেকে বেঁধে নির্যাতনের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।