হরিণাকুন্ড সাব রেজিষ্ট্রারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের কারণে আমজনতা দিশেহারা, প্রতিবাদে দলিল লেখকদের কর্মবিরতী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ২৯ মার্চ, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড উপজেলার সাব রেজিষ্ট্রার হাসানুজ্জামানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে হরিণাকুন্ডর দলিল লেখকরা। জোর পুর্বক ১% ঘুষ আদায় ও দেরিতে অফিসে এসে বিকালে লেট ফি আদায় করার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে কর্ম বিরতী পালন করছেন ৬৩ জন দলিল লেখক। ফলে জমি রেজিষ্ট্রি বন্ধ হয়ে গেছে।
হরিাকুন্ডর প্রবিণ দলিল লেখক ওয়াজেদ আলী অভিযোগ করেন বুধাবার জেলা রেজিষ্ট্রার (ডিআরও) হরিণাকুন্ড অফিসে তদন্তে আসেন। তিনি চলে যাওয়ার পর পরই সাব রেজিষ্ট্রার হাসানুজ্জামান দলিল লেখকদের কাছে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। টাকা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে তিনি কোন দলিল নিচ্ছিল না।
ফলে দুপুর ১২টা থেকে প্রতিবাদ স্বরুপ কর্মবিরতী পালন করছেন। দলিল লেখক আনিছুর রহমান, মইনুল হোসেন, খবির উদ্দীন, বাবুল আক্তার ও মাহবুব হোসেন অবিযোগ করেন, সাব রেজিষ্ট্রার হাসানুজ্জামান অফিসে আসে ১২টায়। এরপর তিনটার পরে দলিল দিতে গেলে লেট ফি দাবী করেন। অথচ সময় মতো অফিসে আসলে এই সমস্যা হতো না। তাদের অভিযোগ দলিল রেজিষ্ট্রি মূল্যের অতিরিক্ত ১% টাকা করে সাব রেজিষ্ট্রার ঘুষ নেন।
দলিল রেজিষ্ট্রির সময় কাগজপত্রের ত্রুটি দেখিয়ে নাইটগার্ড আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে অতিরিক্ত ঘুষ আদায় করেন। জমির পরচা ফটোকপিতে রেজিষ্ট্রির নিয়ম থাকলেও তিনি এই খাতে অতিরিক্ত ঘুষ আদায় করেন। দলিল লেখক ওয়াজেদ আলীর অভিযোগ দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার ঘুষ বানিজ্যের কারণে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। টয়লেটের মধ্যেও ঘুষ লেনদেন করেন, যা অত্যান্ত দুঃখ জনক বলে ওয়াজেদ আলী মন্তব্য করেন।
হরিণাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সাব-রেজিষ্ট্রারের বিরুদ্ধে শুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হরিণাকুন্ডর ফলসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, দুর্নীতিবাজ সাব রেজিষ্ট্রারের ঘুষের কারণে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ইতিপূর্বে তিনিসহ বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান উপজেলা আইনশৃংঙ্খলা মিটিংয়ে তুলেছেন, কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি।
তিনি আরো জানান, তার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে ৪টি দলিল গায়েবের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ড উপজেলার সাব রেজিষ্ট্রার হাসানুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলিল লেখকরা তাকে হেয় করতে এহেন মিথ্যা ও অসাড় অভিযোগ তুলছেন। তিনি বলেন, কৈ কর্মবিরতি তো হচ্ছে না। তবে বৃহস্পতিবার কয়টি দলিল রেজিষ্ট্রি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারে নি।