সেতুমন্ত্রীর ভগ্নিপতির ইন্তেকাল
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ১২ নভেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : বাংলাদেশ আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভগ্নিপতি সাবেক সরকারী কর্মকর্তা, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী নোয়াখালী জেলার সাবেক রেজিস্ট্রার আমানত উল্লাহ (৭৩) ইন্তেকাল করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় রাজধানীর পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহে রাজিউন)। মরহুমের নামাজে জানাযা আগামীকাল (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টায় বসুরহাট উপজেলা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর কোম্পানীগঞ্জের চৌধুরীহাট বি.জামান জুনিয়র হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মরহুম আমানত উল্যাহ। পরে ১৯৬৯ সালে ইস্ট-পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাব-রেজিস্ট্রার পদে যোগদান করেন। জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে তিনি ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষিপুর জেলায় দায়িত্ব পালন শেষে ডিভিশনাল ইন্সপেক্টর অব রেজিস্ট্রেশন অফিসার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
মরহুম আমানত উল্যাহ ছিলেন, একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। চাকরির সুবাদে তিনি ফটিকছড়ি কলেজ, ফটিকছড়ি গার্লস জুনিয়র হাই স্কুল, ফটিকছড়ি নর্থ দরুম প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জে চৌধুরীহাট কলেজও তার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। কোম্পানীগঞ্জের মেহেরুন্নেছা স্কুলকে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি মরহুম আমানত উল্যাহ সমাজসেবায়ও অবদান রেখেছেন।
মরহুম আমানত উল্যার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে, তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, বসুরহাট পৌরসভা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ছিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের প্রমূখ।
আরও খবরঃ-
**নোয়াখালীতে ভয়াল ১২ নভেম্বর নিহতদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত**
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ১২ নভেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ১৯৭০ সনের ভয়াল ১২ নভেম্বরে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার উপকূলীয় চরা লে প্রায় ১০ হাজারের অধিক লোক নিহত হয়েছে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় সামাজিক সংগঠন চুিন মিয়াজী পাবলিক লাইব্রেরী কর্তৃক নিহতদের স্মরণে এক স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মহিফিলের আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাষ্টার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক মো. রফিকুল আলম। উক্ত অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা করেন প্রিন্সিপ্যাল মো. এনামুল হক, প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম, মো. মানছুরুল হক, প্রিন্সিপ্যাল মোঃ শরফুদ্দিন, সামছুত তীব্রিজ, এহসানুল হক মিলাদ প্রমুখ।
ওই দিন ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে নিহত ছাড়াও আহত হয় কয়েক হাজার লোক। আহতদের অনেকে এখনো পঙ্গু হয়ে অনাহারে অর্ধহারে জীবন-যাপন করছে। ঝড়ে ও জলোচ্ছ্বাসে নষ্ট হয়েছে কয়েক হাজার গাছ পালা। গবাদী পশু ও হাঁস মুরগী, ছাগল, ভেড়া সহ মারা যায় প্রায় লক্ষাধিক জীবজন্তু। ঢালচর, মৌলভীরচর, নিঝুমদ্বীপ, সুখচর, নলচিরা, উরিরচর, সাহেবানীর চর, হরনী, চানন্দী ইউনিয়ন সহ পুরো দ্বীপ ও চরাঞ্চলে প্রায় ১২-১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়।
১৯৭০ সনের ১২ নভেম্বর প্রচার প্রচারণা ও বেড়িবাঁধ না থাকায় এত বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সাবেক প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাষ্টার জবিয়ল হক।তিনি আরো বলেন এখনো বড় ধরনের ঝড় জলোচ্ছ্বাস হলে ১৯৭০ সনের মত ক্ষয় ক্ষতি হবে। কেননা এখনো হাতিয়ার চার দিকে বেঁড়িবাঁধ নির্মান করা হয়নি। আমি ১৯৭০ সনে এস এস সি পরীক্ষার্থী ছিলাম।
ওই সময় ঝড় ও জলোচ্ছাসে আমাদের ঘর বাড়িসহ সম্পুর্ন বই পুস্তক উড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে আমাদের ওই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি অতি দ্রুত হাতিয়ার চারদিকে বেঁড়িবাঁধ নির্মান করার দাবি করছি।এদিকে হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম ১৯৭০ সনের প্রলংয়নকরী ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে নিহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।