সুবর্ণচরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গৃহবধূকে ধর্ষণের রায়ের তারিখ পেছানো হয়েছে
নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৪ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত মামলার রায়ের তারিখ পেছানো হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ জানুয়ারি বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন বলেন, চাঞ্চল্যকর মামলার বিস্তারিত লেখার কাজ এখনো শেষ হয়নি। তাই আজ রায় না দিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এরআগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে সূবর্ণচরের স্থানীয় রুহুল আমিন মেম্বারের নেতৃত্বে স্বামী-সন্তান দের বেঁধে গৃহবধূকে (৪০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। অভিযোগ উঠে, পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় রাতের অন্ধকারে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটায়।
পরদিন ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর নির্যাতিতার স্বামী (৫০) বাদী হয়ে চরজব্বার থানায় ৯ জনের নামে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন ১৬ জনের নামে এ মামলায় চার্জশিট দেন।
এ মামলায় পরে ১৬ আসামির মধ্যে বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য রুহুল আমিনসহ ১৫ জন কারাগারে রয়েছেন। চার্জশিটের ১৫ নম্বর আসামি মো. মিন্টু প্রকাশ হেলাল (৫৫) মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক রয়েছেন। মঙ্গলবার কারাগারে থাকা ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলাটি ৭৩ কার্যদিবস শুনানি করা হয়। এতে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্র্রহণ করা হয়। এরমধ্যে প্রথম বিচারক ছিলেন জেলা জজ সামছুদ্দিন খালেদ। তিনি ৫৮ কার্যদিবস মামলাটি শুনানি করেন। পরে বর্তমান জেলা জজ ফাতেমা ফেরদৌস ১৫ কার্যদিবস শুনানি করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ সাক্ষ্যগ্রহণ করে। আসামিপক্ষের পাঁচজন সাফাই সাক্ষী প্রধাান করে। কোনো সাক্ষীই ভোটকেন্দ্রে পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেনি।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত মামলায় গ্রেফতার ১৫ জন আসামির মধ্যে আটজন নিজেদের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রায় শোনার জন্য ভুক্তোভোগী নারী ও তার স্বামী আদালতে উপস্থিত হন। তারা অভিযোগ করে বলেন, রায়ের তারিখ ঘোষণার পর থেকে অপরিচিত সন্দেহ ভাজন লোকজন আমাদের বাড়ির পাশে ঘোরাঘুরি বাড়িয়ে দিয়েছে। মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির আশপাশে এসব লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
তবে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও ওই এলাকায় পুলিশি তৎপরতা জোরদার রয়েছে।