সাতক্ষীরা পুত্র হত্যাকান্ডে স্বামী-স্ত্রী আটক : ৬মাস পরে লাশ উদ্বার
সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি, হেলাল উদ্দীন, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকাকে কেন্দ্র করে পিতা ও পুত্রের মানোমালিন্যের জেরধরে সৎ মায়ের কুপরিকল্পনায় হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি চলতি বছরের মার্চ মাসেই ঘটেছে।
থানা ও সরেজমিন সুত্রে জানাগেছে, আরিফুল ইসলাম (১৭) নামে এক কিশোর প্রায় ৬ মাস পুর্বে নিখোঁজ হয়েছে মর্মে পিতা ঈমান আলী কালিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করে। বিষয়টি ঘীরে চাম্পাফুল এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পুত্র ঘাতক ঈমান আলী নিজেকে বাঁচাতে হায়দার আলী নামক প্রতিবেশিকে জানায়। তখনই চাউর হয়ে যায় পুত্র আরিফুল কে হত্যার বিষয়টি।
জানা গেছে, ঈমান আলী ও তার ছোট বউ জহুরা খাতুন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নিজ বাড়ির আঙিনার কোনে দাফন করে। এরপর থেকে সৎমায়ের পরামর্শে ঈমান আলী ছেলে নিখোঁজের ঘটনাটি প্রচার করতে থাকে। ঘটনাটি কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের চাম্পাফুল গ্রামের ঢালী পাড়ায় ঘটেছে।
চাম্পাফুল ইউপি’র ২নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইলুজ্জামান খান জানান, প্রায় ৬ মাস যাবত আরিফুল ইসলাম নিখোঁজ রয়েছে। আরিফুল ইসলামের অবস্থান সম্পর্কে প্রতিবেশীরা তার পিতা ইমান আলী মোড়ল ও তৃতীয় স্ত্রী জোহরা খাতুনকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকে। একপর্যায়ে এলাকাবাসী ঘটনাটি স্থানীয় ১নং ওয়ার্ডের সদস্য কাইয়ুম গাইনকে জানান।
ইউপি সদস্য কাইয়ুম গাইন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইমান আলী মোড়ল ও সৎ মা জোহরা খাতুনের নিকট আরিফুল ইসলাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, গত চৈত্রমাসের ১ তারিখ রাতে তাদের ছেলে বাড়ির পাশের একটি গাছের ডালে দড়ির সাহায্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছিল।
পরদিন সকালে ঝুলে থাকা লাশ দেখতে পেয়ে তারা গাছ থেকে লাশ নামিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে বিকেলে বাড়ির পাশে কবর দেয়। আত্মহত্যার ঘটনা কাউকে জানানো হয়নি কেন জানতে চাইতে তারা জানান, পুলিশকে জানালে মৃত ছেলের কিডনি খুলে নিয়ে যাবে এজন্য কাউকে না জানিয়ে ইমান আলী একাই বাড়ির পাশে কবর খুড়ে তাকে দাফন করে।
ইমান আলী মোড়ল ও জোহরা খাতুনের রহস্যজনক আচরণ ও বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জনতা আরিফুলকে হত্যার পর লাশ গুম করার জন্য পুতে রাখার অভিযোগে ইমান আলী ও জোহরা খাতুনকে আটক করে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
থানার উপ-পরিদশক চিন্ময় মন্ডল রাত সোয়া ৮ টার দিকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটককৃতদের থানায় আনা হচ্ছে। শনিবার সকালে লাশ উত্তলোনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নিহত আরিফুল ইসলাম ঘাতক ইমান আলী মোড়লের প্রথম স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান। শনিবার দুপুরে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ দেলোয়ার হুসেন এর নেতৃত্বে পুলিশ এর একটি বিশেষ টিম কবর থেকে অর্ধগলিত লাশ উত্তোলন করেছে।