সংবাদ সম্মেলনে তিন বিজয়ী প্রার্থীর অভিযোগ
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি, কামরুজ্জামান, ১৯ জানুয়ারী, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গত ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নবনির্বাচিত তিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার (১৯ জানুয়ারী) বিকালে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন ভূঁইয়া।
এসময় তারা দাবী করেন, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গত ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেই তিনজন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তারা নিজেদের যোগ্যতায় জনগণের ভালবাসা অর্জন করার কারণেই। এই বিজয়ে আওয়ামীলীগের সকল পর্যায়ের কমিটি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমানের কোন ভুমিকা ছিল না। বরং প্রকাশ্যে হুমকি, বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রকাশ্যে সহযোগিতা করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে বিজয়ী প্রার্থীরা বলেন, ফরিদগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান এবং আওয়ামীলীগ নেতা খাজে আহমেদ মজুমদারের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা ১৩জন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করি। কিন্তু নির্বাচনে মাঠে আমরা সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূইয়া, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান এবং আওয়ামীলীগের সকল পর্যায়ের কমিটির কর্তৃক নানা প্রতিকুলতার সম্মুখিন হই। তারা সহযোগিতার পরিবর্তে আমাদের কর্মী সমর্থকদের নানা হুমকি ধমকি, প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন। আমরা আওয়ামীলীগ মনোনীত তিন জন প্রার্থী বিগত দিনে মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি ও জনপ্রিয় আওয়ামীলীগ নেতা খাজে আহমেদ মজুমদারের সার্বিক সহযোগিতার ফলে বিজয়ী হতে পেরেছি।
গত ১৮ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই সংবাদে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব জাহিদুল ইসলাম নোমান দাবী করেছেন “যে তিনজন জয়লাভ করেছেন তাদের বিজয়ের পেছনে আমার ও দলের ভূমিকা ছিল। তারা আমাদের সাথে নির্বাচন নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করেছে”।
জনাব জাহিদুল ইসলাম রোমানের এই দাবী অসত্য, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও মনগড়া। আমরা যাতে নির্বাচিত না হই এই লক্ষে তারা প্রতিনিয়ত নানান পরিকল্পনা ও কুটচাল করেছেন। তার অংশ হিসেবে সকল ইউনিয়নে তাদের প্রতিনিধি ও কর্মীকে একদিকে আমাদের বিরুদ্ধে খাটিয়েছেন অন্যদিকে তাদের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের পরাজয়ের লক্ষে তাদের প্রতিনিধি ও কর্মীরা ধিরামানভাবে পরিকল্পনা ও কাজ করে গেছেন।
রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে তার সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কাদের খোকন এবং ওয়াহিদুর রহমান এর পক্ষে তার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম রিপনের নেতৃত্বে চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জ থেকে কর্মী ও ভাড়াটে বাহিনী নিয়ে এলাকায় উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং তান্ডব করেছে।
উনি নিজে প্রার্থী শরীফ খানকে বলেছেন, “তুই কিভাবে নির্বাচিত হছ আমি দেখবো। তুই নির্বাচিত হলে আমি উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবো”। শুধু তাই নয়, তার পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব জিএস তছলিন, তার ইউনিয়ন প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সবুজ পাটওয়ারী, তার বাবা কৃষকলীগের সভাপতি আবদুস ছাত্তার পাটওয়ারী, শরীফ পাটওয়ারী, তার একনিষ্ঠ কর্মী ইউসুফ মিজিসহ সকলেই নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে। শুধু তাই নয়, “রোমান ভাইয়ের আনারস” মিছিল হয়েছে এবং ঐ ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে।
চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের চশমা প্রতীকের প্রার্থী জনাব নুরুন্নবী জমাদারকে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। তার আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা কর্মী বাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ও নুরুন্নবী জমাদারের চশমা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছে।
গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীকে (চশমা) এবং এমরান হোসেন ভূঁইয়া (আনারস) দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। এই প্রার্থীর পক্ষে তার প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, নুরে আলম রনি, মোস্তাফিজুর রহমান, কাইয়ুম, জহিরুল ইসলাম খান, মুরাদ ভূঁইয়া, সোহাগ ভূঁইয়া, স্বপন ভূঁইয়া, শামিম, রিপন, তৌফিক ভূঁইয়াগং বিরামহীনভাবে কাজ করেছে।
অতএব, জাহিদুল ইসলাম রোমানের অসত্য ও বানোয়াট দাবী আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের জয়লাভের পেছনে তার বিন্দুমাত্র সহযোগিতা নেই, বরং বিরোধীতা ছিল। তদন্ত করলে আমাদের বক্তব্য প্রমাণ হবে।
এসময় রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফ হোসেন খান ও অসুস্থতার কারণে ভার্চুয়ালী চরদু:খিয়া পুর্ব ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মিরাজ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পৌরসভার এমপি প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর পালোয়ান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্মআহŸায়ক হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।