‘শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই, সোনার বাংলা গড়তে চাই’ এই অঙ্গীকার নিয়ে মহান মে দিবস পালিত
ঢাকা, ০১ মে, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ‘শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই, সোনার বাংলা গড়তে চাই’ এই অঙ্গীকার নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান মে দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। শ্রমিকদের দাবি ও অধিকার আদায়ের দাবিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন মিছিল, র্যালি, মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে।
ঢাকা মহানগরীর প্রাইভেট কার ও ট্যাক্সি ক্যাব ড্রাইভার্স ইউনিয়ন, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, দি সিটি ব্যাংক কর্মচারী পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী মটরচালক লীগ, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কাস ফেডারেশন, জাগো বাংলাদেশ শিশু কিশোর ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, কারিতাস সেফ প্রকল্প, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক, ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নিজ নিজ ব্যানারে দিবসটি উপলক্ষে সমাবেশ ও র্যালীর আয়োজন করে।
শ্রমিকের কর্মেই দেশ আজ উন্নত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে হলে শ্রমিকদের উন্নতির বিকল্প নেই।
দৈনিক কাজের সময় ৮ ঘণ্টা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, অতিরিক্ত কাজের বিনিময়ে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক প্রদান, আইনি সুরক্ষা দিয়ে জাতীয় নূন্যতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে।
এদিকে রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় শ্রমিক জোট আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা দাবির প্রতি সমর্থন করে বলেন, আমরা কারখানা রক্ষা করতে চাই, শ্রমিকদেরও হাসি মুখে রাখতে চাই। এবারের মে দিবসের অঙ্গীকার হোক নূন্যতম মজুরি নিশ্চিত করার একটি স্থায়ী ব্যবস্থা হোক, সুস্থ শ্রমিক মালিক সম্পর্ক হোক, নিরাপত্তা হোক, মর্যাদা পাই, সম্মান হোক এবং শ্রমিকরা হাসি-খুশি থাক।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ভালো শিল্পায়ন হয় না। তাই উৎপাদন বাড়াতে হলে শ্রমিকদের হাসিমুখে রাখতে হবে। উপযুক্ত সম্মানজনক মজুরি দিতে হবে। মনে রাখতে হবে শ্রমিকরা হাসিখুশি থাকলে, মর্যাদাপূর্ণ মজুরি পেলে উৎপাদন বাড়বে, শিল্পাঞ্চল ভালো থাকবে, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। উন্নতি করতে হলে শান্তি দরকার। আর সেই শান্তি নিশ্চিত করতে হলে দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ করতে হবে। তেমনি জঙ্গিবাদী তেতুল হুজুরদেরও বাংলাদেশের রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে। জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা নারী শ্রমিকের শত্রু, শ্রমিক সমাজের শত্রু, বাংলাদেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু।
নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বিভিন্ন জেলায় যেমন- খুলনা, সিলেট, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, জয়পুরহাট, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুড়া, গোপালগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, ফরিদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালি, মেহেরপুর, মাদারিপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহান মে দিবস পালিত হয়েছে।