রাজারহাটে তিস্তার তীব্র ভাঙ্গনে বসতবাড়ি বিলীন
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ৩১ জুলাই, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম ও বগুড়া পাড়ায় গত এক মাসে ২৬০টি বসতবাড়ি তিস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পুরা একটা গ্রাম তিস্তার আগ্রাসী ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে গেছে। এই ভাঙ্গনে প্রায় ৫০ একর আবাদি জমি তিস্তানদীর গর্ভে চলে গেছে। বসতবাড়ি হারিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বসতবাড়ি হারা দুই শতাধিক পরিবার। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে অন্যের জায়গায় আবার কারও ঠাই হয়েছে রাস্তার পাশে। তাদের এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসেননি কেউয়ে। উপর ওয়ালার উপর ভরসা করেই কাটছে তাদের দিনকাল।
ভুক্তভোগীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতা কেই দায়ী করছেন। বগুড়া পাড়া গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, এক মাসেরও কম সময়ে লালমনির হাট জেলার গোকুন্ডা ইউনিয়ন থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম জেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের বগুড়া পাড়া পর্যন্ত ২৬০টি বসতবাড়ি নিমিষেই তিস্তানদীর গর্ভে চলে গেলেও কুড়িগ্রাম জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। অথচ লালমনির হাট জেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গনরোধে কাজ করছেন লালমনির হাট পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বিরাজ উদ্দিন বলেন, তিস্তা আমাদের সব কিছু কেড়ে নিলো। এখন বউ বাচ্ছা নিয়ে খুব কষ্টে আছি, কোন রকমে অন্যের জায়গায় ছাপরা তুলে রাত কাটাচ্ছি। প্রতিবেদক শনিবার দুপুরে ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের বগুড়া পাড়া গ্রামে নদী ভাঙ্গনের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ভুক্তভোগীরা প্রতিবেদক কে দেখে ঘিরে ধরে তাদের মনের আক্ষেপের কথা জানান।
বাড়িভিটা হারানো নুরনবী, আঃ রফিক, এরাজ উদ্দিন, সাফর আলী ও বিরাজ উদ্দিন প্রমুখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, হে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ আমরা নিঃস্ব রিক্ত সব কিছু হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আপনি আমাদের মাথা গোজার ঠাই করে দিন।
এবিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম কে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তবে এস ডি মাহমুদ হাসান বলেন, বগুড়া পাড়ায় যেভাবে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তাতে এই অবস্থায় জিও ব্যাগ বা জিও টিউব বস্তা ফেলে ভাঙ্গনরোধ করা সম্ভব নয়। শুকনো মৌসুমে নদীরতীর সংরক্ষণ করে নদী শাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বসতবাড়ি হারা পরিবার গুলোর পুর্নবাসনে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম বলেন, বসত ভিটে হারিয়ে যাদের মাথা গুজার ঠাই নাই এমন পরিবার যদি অন্য কোন ইউনিয়নে যেতে চায় তাহলে তাদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করে দিবো। এব্যাপারে ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছি।