রংপুর ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা
নীলফামারী প্রতিরিধি, মো.শাইখুল ইসলাম সাগর, ০৫ আগস্ট, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : রংপুর ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতাল চিকিৎসার নামে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রোগী ও তাহার পরিবার। সাম্প্রতিক ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া একজন রোগীর সঙ্গে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করা হয়েছে বলে, ভুক্তভোগী সেই রোগী অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী রোগী বলেন, গত ২৫ জুলাই রংপুর ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালে প্রচন্ড কোমর ব্যথা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। রোগীর নাম মো.জাকারিয়া হাসান জাকির। সে এতো অসুস্থ যে হাঁটা চলা করতে পারেনা। বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। প্রস্রাব পায়খানা বিছানায় শুয়ে করতে হয়। সেই রোগী কে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ২০৩ নং কেবিনে ভর্তি রাখা হয়।
কেবিনে রোগী কোমরের ব্যথায় ছটফট করে ডাক্তারা বলেন তার অপারেশন করতে হবে। তার অপারেশন করবেন ডাক্তার হাবিবুর রহমান। রোগীর নাম আর ডাক্তারের নাম লিখে হাসপাতালের অভ্যর্থনা বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখা হয়। রোগীর করোনাভাইরাসের টেস্ট করার পরে ডাক্তার চিকিৎসা দিবে। রোগীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এম আর আই রিপোর্ট থাকার পরেও আবারও এম আর আই, এক্সে করানোসহ বেশ কয়েকটি টেস্ট করানো হয়। রোগীদের বিভিন্ন টেস্টে সব মিলিয়ে ১০/১২ হাজার টাকা খরচ হয়।
রোগীর বিভিন্ন টেস্ট করাতে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে রোগীর পরিবারকে দারুণ দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। হাসপাতালে সিড়ি ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা না থাকায়, অসুস্থ রোগীকে নিয়ে দ্বিতীয় তলায় ওঠানামা করতে দারুণ দুর্ভোগের শিকার হতে হয় তাদের। এরপরও রোগীকে এ টেষ্ট সে টেষ্ট দিয়ে সময় কালক্ষেপণ করতে থাকে হাসপাতালের ডাক্তাররা। এই ভাবে চলে আট দিন।
হঠাৎ হাবিবুর রহমান নামে একজন ডাক্তার এসে রোগীকে ও তার সঙ্গে থাকা আত্বীয়দের বলেন, ঈদুল আজহার পর আগস্টের ৪ তারিখে তার অপারেশন করবেন। সেইদিন ডাক্তার ১০০০ টাকা ভিজিটও নিয়েছে। ৩ আগষ্ট রোগীর আত্বীয়রা ডাক্তার হাবিবুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। তখন ডাক্তার ফোনে বলেন তোমরা এখনও বাড়ি যাওনি। ডাক্তারের কথা শুনে রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজনের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
এদিকে রোগীকে অপারেশন কথা বলে ১১দিন কেবিনে রাখা হয়। রোগী বুঝতে পারে এখানে তার চিকিৎসা হবে না। এখানে চিকিৎসার নামে শুধু কেবিন ভাড়া বাড়াচ্ছে। তাই রোগী হাসপাতালের কেবিন ভাড়া বাবদ ৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১৪০০০/ হাজার টাকার মতো বিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে দিতে হয়েছে। রোগীর সঙ্গে এতো বড় প্রতারণা করার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি।
এদিকে রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন টেষ্টসহ সব মিলে ৩০,০০০/হাজার টাকার বেশী খরচ হয়েছে। অথচ রোগী জাকারিয়া হাসান জাকিরের কোমরের অপারেশন চিকিৎসা কিছুই হয়নি। সে কোমরের ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। হাসপাতাল ও ডাক্তার যে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এই প্রতারণার বিচারের দাবি করেন রোগী ও তার আত্বীয় স্বজন।
এব্যাপারে ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোঃ আজহার আলী শাহ’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাহাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।