নীলফামারী প্রতিনিধি, মোঃ শায়খুল ইসলাম সাগর, ২৭ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ডিমলায় ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ২৭৯০ টি পরিবার পানি বন্দি হয়ে গেছে ।
জানা যায়, পানি বন্দি ২৭টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণলয়ের বরাদ্ধকৃত শুকনা খাবার ও ২ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করেছে উপজেলা প্রশাসন।
শুকনা খাবার ও নগদ অর্থ প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়শ্রী রানী রায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মেজবাহুর রহমান, ত্রাণ শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম সহ স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যান বৃন্দ।
শনিবার (২৭-জুন) সকাল ৬টায় দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় আরো দুই সেন্টিমিটার কমে আসে। তবে দুপুর ১২টায় উজানের ঢল বৃদ্ধি পাওয়ায় ৭ সেন্টিমিটার আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি একই পয়েনেট ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার বিপদসীমা ৫২.৬০ মিটার। বর্তমানে পানির প্রবাহ চলছে ৫২.৮০ মিটার। সুত্র মতে উজানের ঢল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তার ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায় গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তা অববাহিকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭৭ মিলিমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ জানান পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট ২৪ ঘন্টায় খুলে রাখা হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস (ফ্লাড ফিউজ) এর কাছে ঢলের পানি এখনও ৪ ফিড নিচে থাকায় লাল সংকেত জারি করার পরিস্থিতি হয়নি।
তবে হলুদ সংকেতের মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষজনকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে ভারী বর্ষণ উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে সৃষ্ট বন্যায় ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানি, ঝুনাগাছ চাঁপানি, গয়াবাড়ি এবং ঝুনাগাছা চাঁপানি।
ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান তার এলাকার ছাতুনামা ও ভেন্ডাবাড়ির অবস্থা বেহাল। সেখানকার ৭০০ পরিবারের ঘরে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া ১২ পরিবারের বসতঘর নদীতে বিলিন হয়েছে। খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলা লিথন বলেন তার কিছামত ছাতনাই গ্রামের ৩০০ পরিবার বন্যা কবলিত।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঈনুল ইসলাম বলেন চরখড়িবাড়ি এলাকায় স্বেচ্ছশ্রমে নির্মিত বালির বাঁধটি অত্যান্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সকলে মিলে বাধটি রক্ষার চেষ্টা চলছে। এটি বিধ্বস্ত হলে চরখড়িবাড়ি গ্রামটি পানির তোড়ে তলিয়ে যাবে।পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন তার এলাকা ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামটি নদীতে ভাসছে।