নীলফামারীতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বে-দখল
নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ২২ জুন, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : অবিস্বাস্য হলেও সত্য যে, সরকারি মাল দড়িয়ামে ঢাল অবস্থা। বাংলাদেশ রেলওয়ের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ভূমি খেকোদের দখলে। গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন, মার্কেট বাসাবাড়ি। কিন্তু দেখার বা বলার যেন কেউ নেই। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রেলওয়ের জমি দখলের ভয়াবহ চিত্র। সারা দেশে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে গেছে। যার বেশীর ভাগই রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রেল সংশ্লিষ্টদের দখলে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন অনুয়ায়ি শুধুমাত্র নীলফামারী জেলার উপজেলা সদর সৈয়দপুরেই দখল হয়েছে সাড়ে তিনশ একর জমি। বেহাত হয়েছে কেপিআই (সংরক্ষিত) ভূক্ত জমিও। ভূমি খেকোদের তালিকায় রয়েছে সরকার দলীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ছাড়াও স্থানীয় প্রভাবশালীর নাম। সৈয়দপুর রেলের জায়গায় শামসুল হক মেমোরিয়াল একাডেমি, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ল্যায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ সহ অন্তত ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। মাথা উঁচু করে দাড়িযেছে বহুতল অনেক ভবন-মার্কেট। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সংগঠনের অফিস। একসময় যারা রেলে মিস্ত্রীর চাকরি করেছেন তারাও রেলের জায়গায় গড়ে তুলেছেন আলিশান অট্টালিকা।
তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রেলের জায়গায় প্রভাবশালীদের পিতার নামে স্কুল গড়ে ওঠার কথা। গত ১৮ই মার্চ তদন্ত কমিটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সেলিম রেজার কাছে দাখিল করা প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, সৈয়দপুরে রেলের জমি রয়েছে ১১০ একর। অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে ১১৩১ টি। ১ তলা ভবন রয়েছে ৮৭ টি, ২য় তলা ভবন ১৬৭ টি, ৩য় তলা ভবন ৬৫ টি, ৪ তলা ভবন ২৬ টি, ৫ তলা ভবন ৫ টি, ৬ তলা ভবন ১টি সহ বাসাবাড়ি রয়েছে ১৫০ টি। দলীয় অফিস ৬ টি, আবাসিক হোটেল ৩৬ টিসহ ৫ হাজার অবৈধ দোকান। রয়েছে ১৬টি ব্যাংকের শাখা অফিস সহ ৪৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। আর এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ভূমি দস্যুরা যুগের পর যুগ অবৈধ ভাবে ভাড়া আদায় করে আসছেন।
প্রতিবেদনে রেলের জমিতে গড়ে ওঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মঞ্জুরি বাতিল এবং প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিস্ট শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। অপর দিকে রেলের জমি দখলে নিরব ভূমিকার কারণে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক জয়দুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হয়েছে। এদিকে সৈয়দপুরে রেলের জমি দখল ও ভূমি খেকোদের নাম তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসায় তোলপার শুরু হয়েছে গোটা জেলায়।