দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ
সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি, হেলাল উদ্দীন, ২২ আগস্ট, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরের কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে জরাজীর্ণ বেঁড়িবাধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের দীর্ঘ তিন মাস পেরিয়ে গেলেও পানি বন্দী হয়ে প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের মানুষ এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
তার উপর বর্তমান অমাবশ্যার গোনে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা, কুড়িকাউনিয়া ও হরিশখালী, শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী ও কোলা এবং গাবুরা ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জোয়ার-ভাটা বইছে লোকালয়ে ও বাড়ির উঠানে। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে বিশাল জনগোষ্ঠী। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব।
এদিকে, শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে স্থানীয় ইউপি চেয়ারর্যানের নেতৃত্বে হাজার হাজার এলাকাবাসী গতকাল রাত থেকে শুক্রবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমে লেবুবুনিয়া গ্রামের ৬ টি স্থানের রিংবাধ সংস্কার করলেও দুপুরে জোয়ারে ৪ টি স্থানে তা আবারও ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে তিনটি গ্রাম।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুরের প্রবল জোয়ারে আশাশুনি ও শ্যামনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। তারা আরো জানান, এখনই যদি বেড়িবাধ সংস্কার করা না হয় তাহলে পরবর্তী জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে। শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, তার গোটা ইউনিয়ন এখন পানিতে নিমজ্জিত। তার ইউনিয়নের ৩৬ হাজার মানুষ বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, তার ইউনিয়নে লেবুবুনিয়া, গাবুরা ও খলসিখালী তিনটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত। তবে, হাজার হাজার এলাকাবাসীকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কোন রকমে ৬ টি স্থানে রিংবাধ দিলেও দুপুরের জোয়ারে ৪ টি স্থানে তা আবারও ভেঙে গেছে। এতে তার ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজারের অধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।
আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসিম বরন চক্রবর্তী জানান, বর্তমানে তারউপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহি প্রকৌশলী সুধাংশ কুমার সরকার জানান, কয়েকটি স্থানে রিংবাধ দিয়ে পানি বন্ধ করা হয়েছে। তবে, প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা ও কুড়িকাউনিয়া এবং শ্রীউলা ইউনয়নের হাজরাখালী পয়েন্টে বেঁড়িবাধ ভেঙে এতই গভীর হয়েছে যে সেখানে এখন বেঁড়িবাধ সংস্কার করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।