তিস্তা ব্যারাজের অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেমের রাউটার চুরি
নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ১০ জুলাই, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দেশের তৃতীয় বৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের জল কপাট নিয়ন্ত্রনে স্থাপিত অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেমের রাউটার চুরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিস্তা ব্যারাজ যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছুজ্জোহা।
তিনি জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়েছে। সূত্র মতে, সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ফাস্টকম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেমটি চালু করা হয়েছিল তিস্তা ব্যারাজের জলকপাট নিয়ন্ত্রনের জন্য। ২০১৮ সালের জুন মাসে এটি স্থাপন দেখানো হয়। স্থাপনের পর ফাস্টকম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপসের মাধ্যমে তিস্তা ব্যারাজের ৫২টি জলকপাট অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেমটি চালু করে। সেখানে মোট ৭টি রাউটার স্থাপন করা হয়।
এ অবস্থায় ১৮ মাস যেতে না যেতে অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেমটি সঠিকভাবে কাজ করেনি। সেটি ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফাস্টকম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অটোমেশন কাজের চ্যুক্তি শেষ হয়ে যায়। পাশাপাশি অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেমটির পুরো বিল তুলে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সুত্রগুলো জানায়, তিস্তা ব্যারাজের মোট জলকপাট ৫২টি। এর মধ্যে মূল নদীর পানি প্রবাহের জন্য রয়েছে ৪৪টি ও সেচ ক্যানেলে পানি সরবরাহের জন্য রয়েছে আটটি জলকপাট। তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণের তৎকালিন সময় প্রতিটি জলকপাট নিয়ন্ত্রণের জন্য বিদ্যুতচালিত সুইট সিস্টেম ও ম্যানুয়াল সিস্টেম রাখা হয়। অভিযোগ রয়েছে ২০০৩ সালে তিস্তা ব্যারাজের জলকপাট নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুতচালিত সুইচ সিস্টেম অচল হয়ে যায়। অচল হয়ে যাওয়া তিস্তা ব্যারাজের বিদ্যুতচালিত সুইচ রুম নতুন ভাবে স্থাপন করতে নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছুজ্জোহার প্রকল্প তৈরি করেন। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে অভিযোগ করে জানান, অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেম ঠিকমতো কাজ না করায় এর ৭টি রাউটারের মধ্যে ৬টি রাউটার পরিকল্পিতভাবে চুরি করার কথা বলা হলেও এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ তিস্তা ব্যারাজ হলো কেপিআই ওয়ান। এখানে ২৪ ঘন্টা আনসার বাহিনী ও পুলিশ টহল জোড়দার থাকে। এ অবস্থায় কি ভাবে মূল্যবান রাউটার চুরি হয়? ছয়টি রাউটার চুরি দেখিয়ে অপর একটি রাউটার খুলে রাখা হয় বলে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলা হলে নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোডের তিস্তা ব্যারাজ যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছুজ্জোহা বলেন, অ্যাপসের মাধ্যমে অটোমেশন অপারেটিং সিস্টেম চালু করা হয়। ব্যারাজের উপর যন্ত্রপাতির সঙ্গে ৭টি রাউটার স্থাপন করা ছিল। রাউটার গুলো কি ভাবে চুরি হয়েছে, না কেউ খুলে নিয়ে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে হাতীবান্ধা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি। তিনি বলেন, আমরাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ঠিকাদারকে চুড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়নি।
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা থানায় যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, এ ঘটনায় দোয়ানী আইসি ক্যাম্পে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের যান্ত্রিক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছুজ্জোহা একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। এ বিষয়ে তাদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরে মামলার জন্য এজাহার চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি তারা ৯ জুলাই বিকাল পযর্ন্ত দায়ের করেননি।