ঝিনাইদহে ৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী’ পদে নিয়োগ: ৩ কোটি টাকার অর্থ বাণিজ, আদালতে মামলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ১০ জুলাই, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহ সদরের ৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী’ পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে সাড়ে ৩ কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৩ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ জন প্রার্থী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গত ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল সদর উপজেলার ৩৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। উলেখিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এলাকার মধ্যের প্রার্থীরা আবেদন করে। এতে প্রতিটি পদে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম, এমপি প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম হিরন, সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুশতাক আহম্মেদ প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিদের সাথে যোগসাজস করে এ নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন।
ভুক্তভোগি সদর উপজেলার নারানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রার্থী জালাল উদ্দীনের ছেলে চান্নু মিয়া, আড়মুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রার্থী আতিয়ারের ছেলে রেজাওয়ানুল হক ও তেতুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রার্থী রফিকুল ইসলামের ছেলে রুবেল হাসান জানান, গত ৪ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় এ পরীক্ষায় ১৭৮ জন প্রার্থী। নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার শাম্মী ইসলাম, সদর এমপি প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম হিরন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুস্তাক আহমেদ, ৩৬টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মন্ডলী।
ভাইভা বোর্ডে বিভিন্ন প্রকার অমূলক ও অসংগতিপূর্ন প্রশ্ন করে সাধারন প্রার্থীদের বিভ্রান্তিতে ফেলা হয়। এছাড়াও এমপির ডিও লেটার দিয়ে যারা আবেদন করেছেন তাদের চাকুরি দেওয়া হয়েছে। অযোগ্য ব্যাক্তিদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। এ ঘটনায় ওই ৩ জন ভুক্তভোগি নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ এনে নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যদের বিবাদী করে ঝিনাইদহ বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে ১৯২/১৮, ১৯৩/১৮, ১৯৪/১৮ পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে।
এফিডেভিটে প্রতিটি স্কুলের সভাপতি ঘুষ বানিজ্যের সাথে জড়িত থাকার কথা উলেখ করা হয়। সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিটি পদে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ও দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা। এছাড়াও একই অভিযোগে ইতিপুর্বে সদর উপজেলার লাউদিয়া, বংকিরা ও পানামী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ স্থগিত হয়েছে। এদিকে সদর উপজেলার উল্লেখিত ৩৬ টি বিদ্যালয়ে নিয়োগ বানিজ্যের সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ঝিনাইদহের সচেতন মহল।