জয়পুরহাটে চিনিকলের বর্জ্যে দূষিত তুলশীগঙ্গা, জন দুর্ভোগ
জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি, আল জাবির, ২০ জানুয়ারি, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : জয়পুরহাট চিনিকলের অপরিশোধিত বর্জ্য নিঃসৃত পানির দুর্গন্ধে জেলার অন্তত ২০ গ্রামের প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। পানির অসহ্য গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে নগর জীবনও।
শুধু তাই নয়, এই বর্জ্য নিঃসৃত পানি অপসারণে কালচে রং ধারণ করেছে জেলার তুলশীগঙ্গা নদীর পানি। এতে মরে যাচ্ছে নদীর জলজ প্রাণী, মাছ। বদলে যাচ্ছে আশেপাশের জনজীবন।
তবে বর্জ্যের পানিতে পরিবেশ দূষণ ঘটছে- এমন অভিযোগ মানতে নারাজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, চিনিকলের অপসারিত পানি জমা হয় তাদের নিজস্ব ক্যানেলে।
দেশের বৃহত্তম জয়পুরহাট চিনিকল ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ না করেই চিনি উৎপাদন শুরু করে। সেই থেকেই এর বর্জ্যে দূষণ ঘটছে এলাকার পরিবেশ। চিনিকল থেকে এক নর্দমার মাধ্যমে অপরিশোধিত বর্জ্য নিঃসৃত পানি অপসারন করা হয় আক্কেলপুর উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীতে। দুর্গন্ধময় পানি পাকা নর্দমার মাধ্যমে খাল-বিল হয়ে পড়ে নদীর পানিতে। এতে তুলশীগঙ্গা নদীর পানি কালচে হয়ে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি পানির দুর্গন্ধে চরম অসুবিধায় পড়েছে শিক্ষার্থী এবং বসবাস করা নদী সংশ্লিষ্ট মানুষরা।
আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী এলাকার নদী পাড়ের আমেনা বেগম বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪ কে জানান, সুগার মিল চালু হওয়া মাত্র নদীর পানি কালচে রং ধারণ করে এই জন্য আমরা নদীর পানি সংসারের কাজে লাগাতে পারিনা।
একই এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক জানান, এইসময় তুলশী গঙ্গার নদীর সব মাছ মরে যায়। কৃষি কাজে এই পানি ব্যবহার করতে পারি না।
সদর উপজেলার পালী গ্রামের মতিউর রহমান বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪ কে জানান, নদীর পানিতে জীবাণু থাকার কারণে পানির দুর্গন্ধে আমরা বাড়ি থাকতে পারি না।
তবে শোধনাগার নির্মাণের আগে বিকল্প হিসেবে ক্যানেলে নেওয়ার পর চিনিকলের অপরিশোধিত বর্জ্য নিঃসৃত পানিতে পরিবেশ দূষণ ঘটছে- এমন অভিযোগ মানতে নারাজ জয়পুরহাট চিনিকল ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন আকন্দ।
তিনি জানান, তলীসঙ্গার নদীতে যে বর্জ্য তা সুগার মিলের একার নয়। চাতাল, মুরগীর হ্যাচারিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে এই সব বর্জ্য তুলশী গঙ্গা নদীতে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জয়পুরহাট চিনিকলে ইটিপি প্লান্ট (তরল বর্জ্য শোধনাগার) স্থাপনের প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করেছে। এটি স্থাপন করা হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।
এলাকার পরিবেশ দূষণরোধে শীঘ্রই বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করে অপরিশোধিত পানি শোধনের পাশাপাশি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিবেন চিনিকল কর্তৃপক্ষ এমন দাবি এলাকাবাসীর।