চট্টগ্রামে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, স্বজনদের বিক্ষোভ
নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ২৭ মার্চ, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : চট্টগ্রামের হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান জাবেদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার কলিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনার বিচার ও জাবেদের ফাঁসির দাবিতে লাশ নিয়ে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে নিহতের পরিবার এবং স্বজনরা। পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
রোববার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় এসব কর্মসূচি পালন করে তারা। এতে নিহতের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসি অংশগ্রহণ করেন। মানবন্ধনে স্বজনরা কলি হত্যার বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন। এ সময় তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জাবেদকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এরআগে শনিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে একটি ফ্রিজারভ্যানে করে নোয়াখালীতে নিহত কলির লাশ আনা হয়।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ থেকে জানানো হয়, পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান জাবেদ ও নিহত ফাতেমা আক্তার কলি দুজনই নোয়াখালীর বাসিন্দা। জাবেদ সদর উপজেলার বিনোদপুরের বাসিন্দা এবং কলি একই উপজেলার কাদিরহানিফের বাসিন্দা। তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানও রয়েছে। গত ২০১৪ সালে মিজানুর রহমান জাবেদের সাথে পারিবারিক ভাবে ফাতেমা আক্তার কলির বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামীর সাথে চট্টগ্রামের হালিশহরে থাকতো তারা।
কিন্তু জাবেদের বদ মেজাজী স্বভাবের কারণে বিভিন্ন সময় কলিকে মারধর করতো সে। এরই মধ্যে পাশ্ববর্তী এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে জাবেদ। একই সাথে পুলিশে চাকরি করার সুবাধে বেআইনি ভাবে টাকা উপার্যন করতে শুরু করে। এসব বিষয়ে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কলির ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এর যের ধরে গত ৬-৭ মাস আগে কলিকে মারধর করলে তার মাথায় ও চোখে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসব ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করলে জাবেদ কলিকে হত্যার হুমকি দেয়।
এর জের ধরে গত২৫মার্চ বিকেলের কোন একসময় ফাতেমা আক্তার কলিকে মারধর করে হত্যার পর চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের সদস্যদের মোবাইলে জানায়। কলির গলায় গোলাকার কালো দাগ এবং হাতে কাটা জখমের একাধিক চিহৃ রয়েছে। এ বিষয়ে রোববার সকালে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কলির বাবা আহছান উল্যাহ্।
হালিশহর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আল-মামুন জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে এসআই মিজানুর রহমান জাবেদ’সহ ৫জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।