কুমিল্লা সুয়াগাজী বাসের ধাক্কায় প্রাইভেটকার চালকসহ তিনজনের মৃত্যু
কুমিল্লা প্রতিনিধি, আবদুল মান্নান, ১৯ জুন, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের বাসের সাথে প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৩ জন। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে আরো এক জন। হতাহতরা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকার খিলগাও এলাকা থেকে প্রাইভেটকারটি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে শুক্রবার ভোররাতে কুমিল্লার সুয়াগাজী এলাকায় এসে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
মহাসড়কে ইউটার্নে প্রাইভেটকার চালকের অসাবধানতা অথবা শ্যামলী পরিবহনের বাসটির দ্রুত গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে ধারনা করছে হাইওয়ে পুলিশ। দুর্ঘটনায় নিহতরা হচ্ছেন প্রাইভেটকারের মালিক লক্ষীপুর জেলার হামন্দী এলাকার ফখরুল আলম দুলাল, শেরপুর নলিতাবাড়ী এলাকার বেলাল হোসেন, ঢাকার খিলগাও এলাকার মিরাজ। এছাড়া মাহবুব নামে এক ব্যাক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন আছেন।
পুলিশ জানায়, ১৮ জুন শুক্রবার ভোর রাতে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী এলাকার শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো ব-১৫-২৫১৩) বাসের সাথে প্রাইভেটকারের (ঢাকা মেট্রো-গ ৩৯-৭৬৯১) মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ৩ জন । আহত হয়েছে আরো এক জন। নিহত এবং আহতরা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী।
ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, কুমিল্লা সুয়াগাজীর জোড় কানন রেষ্টুরেন্টের সামনে প্রাইভেটকারটি ইউটার্ন অতিক্রম করার সময় অপর দিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসটি ধাক্কা দেয়। এ সময় প্রাইভেটকারের চার যাত্রীর মধ্যে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হয় আর হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন নিহত হয় আর আহত হয় একজন। দুর্ঘটনাকবলিত বাস এবং প্রাইভেটকারটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। বাসের চালক এবং সহকারী পলাতক রয়েছে। এ দিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন নিহতের স্বজনেরা। পরিবারের সদস্যদের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পরেন তারা।
নিহত মিরাজের বাবা মোবারক হোসেন কুটু জানান, ভোর চারটার দিকে এক এমব্যুলেন্স চালক আমাকে কল দিয়ে জানায়, একজন সড়ক দূঘটনায় আহত হয়েছে আপনার কি হয় জানিনা, কুমিল্লা সদর দক্ষিন থানায় আছে বলে জানান। পরে আমরা এসে দেখি আমার ছেলের মরদেহ। আমার ছেলে মিরাজ গাড়ী চালাত, গত একমাস আগে তার চাকরি চলে যায়। এ পাইভাটকারের নিহত গাড়ী চালক বেলাল তাকে চাকরি দিবে বলে তার গাড়ীতে করে নিয়ে আসে। এখন চিরতরে দুজনই চাকুরি ছেড়ে পরপারে চলে গেছে।
প্রাইভেটকারটির মালিক নিহত ফখরুল ইসলামের ভাই আলাল বলেন, আমি সকালে ফোন কলের মাধ্যমে খবর পাই আমার ছোট ভাই সড়ক দূঘটনায় নিহত হয়েছে। খবর পেয়ে থানায় এসে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ দেখতে পাই। আমাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষিপুর। এসে জানতে পারলাম সে নিহত হয়েছে। প্রাইভেটকারটি ইউটার্নেও সময় বাসটি ধাক্কা দেয়। এতে তিনজন নিহত হয়। তারা আমাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষিপুরের আসছিলো প্রাইভেটকারে করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় একজন বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, বেপরোয়া ভাবে বাস চলাচল করায় এ দূর্ঘটনাটি ঘটে। চালকদের দায়সারা ও অবহেলার কারনে এ তাজা প্রাণগুলি আমাদেও হারাতে হয়েছে। মহাসড়কের এ ইউর্টানগুলোতে আরো সর্তকভাবে গাড়ী চালানো উচিত চালকদের।